• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে রিট

প্রকাশ:  ০৭ জুন ২০২৩, ১০:৩৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপনের বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের ৯ জন ইউপি সদস্য সরকারি বরাদ্দের টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনাসহ হাইকোর্টে রিট করেছেন। বিচারপতি মিসেস ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের আদালত এই আবেদন গ্রহণপূর্বক ইউপি চেয়ারম্যানকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার নিদের্শনা দিয়েছেন।  
জানা গেছে, উপজেলার ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপনের বিরুদ্ধে তার পরিষদের ৯ জন সদস্য মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মিসেস ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের আদালতে রিট পিটিশন করে। রিটকারীরা হলেন : ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, মোঃ ইসমাইল, মোস্তফা পাটওয়ারী, মোঃ ইমরান, মোঃ আনোয়ার, মোঃ জাহাঙ্গীর, জাহানারা বেগম, ঝর্ণা বেগম ও  শিরিন আক্তার।
রিটে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক, ডিডিএলজি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযোগে প্রকাশ, ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ পরিষদের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সরকার প্রদত্ত কোনো চিঠি পরিষদের সদস্যদের না দেখিয়ে সকল প্রকল্প টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, ৪০ দিনের কর্মসূচি, হতদরিদ্র কর্মসূচি ও ১% এর সকল প্রকল্পের ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক মিটিং না করে ও পরিষেদের সদস্যগণকে না জানিয়ে উল্টো তাদেরকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও প্রতারণার মাধ্যমে বাড়িতে ডেকে নিয়ে স্বাক্ষর নেন।
 এছাড়া জন্ম নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডি কার্ড, ডিপ টিউবওয়েল বাবদ টাকা আত্মসাৎ করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ইউপি সদস্যরা। এই বিষয়ে ইতিপূর্বে ইউপি সদস্যরা চাঁদপুর জেলা প্রশাসক এবং পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে ভবিষ্যতে এরূপ অনৈতিক কাজ করবে না বলে মৌখিক অঙ্গীকার করেন ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন। কিন্তু তিনি মৌখিক অঙ্গীকার দিয়ে আসার পরও আগের মতো স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করেন। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ ভিজিডির চাল বিতরণ নিয়ে  এক নারীকে শারীরিক নির্যাতনসহ অনিয়মের অভিযোগ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ২৯ মার্চ তিনি চাল বিতরণ করেন। এ নিয়ে ইউপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ওই সময় ইউপি সদস্যরা লাঞ্ছিত হয়। ফলে বাধ্য হয়ে ওই ইউপির ৯ জন সদস্য গত ২৯ মে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন।
আদালতে রিটের শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ইউনিয়ন পরিষদ আইন ৩৯ ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ ও ইউপি চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে আদালত ২৬ জুন’ ২০২৩ তারিখে বা তার আগে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। একই সাথে নিস্ক্রিয়তা এবং ব্যর্থতার জন ২৯/০৩/২০২৩ তারিখে দরখাস্তকারীর দ্বারা দায়ের করা অভিযোগটি নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে (যেমনটি রিট পিটিশনের সংযোজন- ‘সি-১’ এ রয়েছে) কেন স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে, আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া করা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে রিটে আবেদনকারীদের একজন ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে অনিয়মের কারণে অনাস্থা আনা ছাড়াও ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করি। আদালত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নিদের্শনা দিয়েছেন। এছাড়াও অনিয়মের বিরুদ্ধে দুদুকে আবেদন করা হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন রিপন জানান, তিনি হাইকোর্ট বিভাগের নোটিস পেয়েছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছা জানান, তিনি অদ্যাবদি কোনো নোটিস পাননি। নোটিস পেলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

 

সর্বাধিক পঠিত