চাঁদপুরে প্রবাসী স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা, মৃত্যুর ৮ দিন পর লাশ উত্তোলন
চাঁদপুরে প্রবাসী স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মৃত্যুর ৮ দিন পর মৃত খলিলুর রহমান মিন্টু মিজির লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলা ৯ নং বালিয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড উত্তর বালিয়া মিজি বাড়ির কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করা হয়। উত্তর বালিয়া মৃত আব্দুল রহিম মিজির ছেলে খলিলুর রহমান মিন্টু মিজি প্রায় ১৫ বছর যাবত সৌদি ছিলেন।
গত ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসার পরেই পরিবার নিয়ে শহরের মমিনপারা এলাকায় নিজ বাড়িতে বসবাস করেন।গত ২৪ এপ্রিল হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্ত্রী লায়লী বেগম ডাক্তারের পরামর্শে ঢাকা নেয়ার পথে বাবুরহাটে মৃত্যুবরণ করেন। সেখান থেকে লাশ নিয়ে এসে মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এই গুজব ছড়িয়ে দ্রুত তার গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন করে ফেলেন।
এই ঘটনায় প্রবাসী মৃত খলিলুর রহমান মিন্টু মিজির বড় বোন শেফালী বেগম বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী লায়লী বেগম ও শ্যালক সোহাগ জমাদারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসেন সজিব এর উপস্থিতিতে আট দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
মৃত মিন্টু মিজির পরিবার জানায়,দীর্ঘদিন যাবত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টাকা পয়সা ও শহরের বাড়ি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে স্ত্রী লাইলী বেগম ও সোহাগী জমাদার তাকে মেরে ফেলেছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে এই গুজব ছড়িয়ে কাউকে লাশ দেখতে বাধা দেয় এবং দ্রুত পারিবারিক কবরস্থানে রাতের আধারে লাশ দাফন করে ফেলে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সদর এসিলেন্ট ইমরান হোসেন সজিব জানায়, এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলে আদালতের নির্দেশে লাশটি উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মামলার অভিযুক্ত প্রবাসীর স্ত্রী লায়লী বেগম জানায়, গত ২৪ ডিসেম্বর বিদেশ থেকে দেশে এসে সুস্থভাবে জীবন যাপন করেছেন। হঠাৎ 24 এপ্রিল তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সালে আহামেদের কাছে নিয়ে দেখালে তার পরামর্শ মতে ঔষধ খাওয়ালে সুস্থ হয়ে ওঠে।পরে ২৬ তারিখে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ঢাকায় নেওয়ার পথে বাবুরহাটে তার মৃত্যু হয়। সেখান থেকে নিয়ে এসে রাতেই লাশ দাফন করা হয়। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। ননদ শেফালী বেগম এর সাথে ৩ বছর পূর্বে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই কারণে সে ক্ষিপ্ত হয়ে এই মিথ্যা অভিযোগে আমাদেরকে হয়রানি করছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রবাসী মৃত্যুর ঘটনায় তার বোন শেফালী বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে আমরা লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। রিপোর্ট অনুযায়ী মামলার কার্যক্রম চলবে।