• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

শাহরাস্তির রুবেল বিনা অপরাধে তিন বছর সৌদি আরবের কারাগারে ॥ দূতাবাসের হস্তক্ষেপ কামনা

প্রকাশ:  ০৬ মার্চ ২০১৯, ১০:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পাড়ানগর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের বড় ছেলে আহমেদ রুবেল ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিনা অপরাধে সৌদি আরবে তিন বছর যাবৎ জিজান হিযিলাম কারাগারে রয়েছেন। এ বিষয়ে সৌদি আবরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তার পরিবার।
    ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ভিটেমাটি বিক্রি করে ১৬ বছর পূর্বে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। যাওয়ার পর থেকে মোটামুটি ভালোই চলছিল তাদের সাংসারিক জীবন। ২০১৫ সালে আহমেদ রুবেল ছুটিতে আসেন। বাড়িতে থাকাবস্থায় একই উপজেলার হাড়াইপাড়া গ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে দ্বীন ইসলাম সৌদি আরবে আহমেদ রুবেলের আইডিকার্ড (আকামা) দিয়ে ওই দেশে অবৈধভাবে হুন্ডি ব্যবসা করে। আহমেদ রুবেল ছুটি শেষে কর্মের প্রয়োজনে ছুটে যান সৌদি আরবে। আড়াই মাস পর তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সৌদি সিআইডি পুলিশ তাকে আটক করে।
    এ বিষয়ে সৌদি আরব সিআইডি আহমেদ রুবেলকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। সৌদি আদালত আহমেদ রুবেল অবৈধ হুন্ডি ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পায়নি। তাকে  নির্দোষ হিসেবে আদালত রায় প্রদান করে। ৩ বছর কারাগারে থাকার পর আদালতের রায় শেষে সাড়ে ৩ মাস অতিবাহিত হলেও আহমেদ রুবেলের মালিকের সহযোগিতা না পাওয়ায় বের হতে পারছে না রুবেল। তার মালিক ফতেমা হাদী আলি নেছারি। ফাইল নাম্বার ৭৩৩২ ৪৪ ৩৩৪, পাসপোর্ট নম্বর (অঊ) ৫৫৮৮ ৫৩৪।
    এ বিষয়ে আহমেদ রুবেলের স্ত্রী রুজিনা বেগম জানান, একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কারাগারে থাকায় সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চলছে। আমার বড় ছেলে আব্দুল কাদের (১৬) এসএসসির ফলপ্রার্থী ও ছোট ছেলে ফিরোজ আহমেদ বিজয় (৯) ৩য় শ্রেণিতে পড়ছে। আমার স্বামী অত্যন্ত সহজ-সরল প্রকৃতির একজন মানুষ। তিনি আরো জানান, হাড়াইপাড়া গ্রামের দ্বীন ইসলাম আমার স্বামীর আইডিকার্ড দিয়ে ওই দেশে হুন্ডির ব্যবসা করে। যা আমার স্বামী জানতো না। সিআইডি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে তার কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। আমার স্বামী নির্দোষ। দ্বীন ইসলাম ওই দেশ থেকে ২০১৮ সালে পালানোর সময় দাম্মাম বিমান বন্দরে সৌদি পুলিশ তাকে আটক করে। এক বছর যাবৎ সে দাম্মাম কারাগারে রয়েছে। আমি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সৌদি আরবস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আমার স্বামীকে সৌদি কারাগার থেকে মুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সার্বিক সহযোগিতা দিন।
    এ বিষয়ে আহমেদ রবেলের মা সাবিনা (৬০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বড় ছেলেকে অনেক কষ্ট করে জায়গা বিক্রি করে প্রবাসে পাঠিয়েছি। ষড়যন্ত্র করে দ্বীন ইসলাম আমার ছেলের আকামার কার্ড দিয়ে হুন্ডি ব্যবসা করে। যার কারণে আমার সন্তান বিনা অপরাধে তিন বছর সৌদি কারাগারে রয়েছে। আমি আমার সন্তানের মুক্তির জন্যে সরকার ও দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করি।
    এ বিষয়ে আহমেদ রুবেলের ছোট বোন কুলসুম আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম আমার বড় ভাই সংসার পরিচালনার জন্যে আপনজনদেরকে ছেড়ে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছেন। তিন বছর কারাগারে থাকায় আমার ভাইয়ের সন্তানদের পড়ালেখাসহ পরিবারটি আজ অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছে। আমার বড় ভাই আহমেদ রুবেলের মুক্তির জন্যে আমরা সৌদি আরবস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করছি।

 

সর্বাধিক পঠিত