• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরে বৃদ্ধা দেখেন তার ঘরে তালা

প্রকাশ:  ০৭ জানুয়ারি ২০২১, ১২:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরে বৃদ্ধা ভিক্ষুক দেখেন তার থাকার ঘরে তালা। এমন অবস্থা দেখে বৃদ্ধা ভিক্ষুক মনোয়ারা বেগম হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। বাড়ির লোকজন একত্রিত হয়ে ওই ভিক্ষুকের বসত ঘরটিতে তালা মেরে দিয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদগঞ্জে ১১নং পূর্ব ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সন্তোষপুর গ্রামের আইনউদ্দীন বেপারী বাড়ি প্রকাশ চটকি বাড়িতে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনার অভিযোগ পাওয়া মাত্রই থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদ হোসেন ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

পুলিশ ও ভিক্ষুকের পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের হতদরিদ্র মৃত মহর আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম তার এক কন্যা রিনা বেগমকে নিয়ে এই বাড়িতেই বসবাস করতেন। মনোয়ারা বেগমের স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে জীবন জীবিকার তাগিদে ভিক্ষাবৃত্তি করে মানবেতর জীবনযাপন শুরু করেন। স্বামী পরিত্যক্তা কন্যা রিনা বেগমকে নিয়ে ভিক্ষুক মনোয়ারা বেগম তার স্বামীর বাড়ির কাচারী ঘরে বসবাস করে আসছিলেন প্রায় ৪ বছর যাবৎ। এরই মধ্যে বাড়ির লোকজন একত্রিত হয়ে মনোয়ারা বেগমকে ওই ঘর থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলস্বরূপ গত মঙ্গলবার মনোয়ারা বেগমের অনুপস্থিতিতে ওই বসতঘরে তালা মেরে দেন একই বাড়ির বাসিন্দা প্রবাসী শাহআলমের স্ত্রী মনি বেগম ও তার সহযোগীরা।

ভিক্ষুক মনোয়ারা বেগম বলেন, আমি পেটের দায়ে ভিক্ষা করতে বাইরে ছিলাম। অপরদিকে আমার মেয়ে রিনা বেগম চুলোয় ভাত বসিয়ে কিছু সময়ের জন্য বাইরে ছিল। এমন সুযোগে তারা ওই ঘরটিতে তালা মেরে দেন।

রিনা বেগম বলেন, ঘরটি যেহেতু ইজমালি অর্থাৎ বাড়ির সকলের, বাড়ির সবাই মনোয়ারা বেগমের অসহায়ত্বের কারণে ৪ বছর এই ইজমালি ঘরটিতে থাকতে দিয়েছে। তাকে বহুবার বলা হয়েছে এই বাড়িতে তার স্বামীর জায়গা থাকলে তাতে ঘর করে থাকার জন্য।

এলাকার ইউপি মেম্বার বাচ্চু জানান, অসহায় মনোয়ারা বেগমের অনুপস্থিতিতে ঘরটিতে তালা মারার খবর পেয়েছি। যারা ঘরে তালা মেরেছে তারা ্আসলে আমার কথা শুনবে না মনে করে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি নি।

এ বিষয়ে ভিক্ষুক মনোয়ারার মেয়ে রিনা বেগম বাদী হয়ে মনি বেগমকে প্রধান আসামী করে মঙ্গলবার ৩ জনের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

উক্ত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি শহীদ হোসেন মঙ্গলবার এ প্রতিনিধিকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে মানবিক হিসেবে উক্ত বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সর্বাধিক পঠিত