করোনা মোকাবেলায় জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন চরম পেশাদারিত্বের প্রমান রেখেছে।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সমন্বিত কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত জেলা উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছেন । করোনা মোকাবেলায় যে শক্তিগুলো কাজ করছে সন্মুখভাবে থেকে তাদের মধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন রয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে আমাদের মাঠ প্রশাসনের সুরক্ষায় তেমন কোন ব্যবস্থা না থকালেও তাঁরা যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে তা প্রশংসা করতেই হয়। তাঁদের দায়িত্ববোধ থেকে তারা পেশাদারিত্ব দেখিয়েছে। করোনার ঝুঁকি মোকাবেলায় চিকিৎসক , পুলিশ এর পর তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে করোনা পরিস্থির মধ্যেও চরম ঝুঁকি নিয়ে সন্মুখ সারিতে কাজ করতে হচ্ছে প্রশাসনকে।
যখন গোটা দেশ একটি ভৌতিক চিত্রপট, তখনও ২৪ ঘন্টা মাঠে থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছেন আমাদের জেলা উপজেলা প্রশাসন। যারা গোটা জাতিকে রক্ষায় দিন-রাত মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থাটি নিশ্চিত করতে হবে। মাঠ প্রশাসনকে সরাসরি জনগনের সংস্পর্শ্বে থেকে কাজ করতে হয়েছে।
জাতীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোন কোন সময় উশৃংখল জনতা দ্বারা নিগৃহীতও হয়েছে।
সরকারের আদেশগুরো যথাযথভাবে পালন করার ক্ষেত্রে মাঠ প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে পেশাদারিত্ব দেখিয়েছে। আমাদের দেশের নির্বোধ কিছু মানুষকে বোঝাতে গিয়ে অনেক বিড়ম্বনার স্বীকার হয়েছে মাঠ প্রশাসন। কোন কোন ক্ষেত্রে নিগৃহীতও হয়েছে। এটি একেবারেই সত্য যে যে ধৈর্য এবং সহিষ্ণুতা মাঠ প্রশানস এবং পুলিশ প্রশাসন দেখিয়েছে তা বিরল দৃষ্টান্ত। একেবারে খাটি পেশাদারিত্ব যাকে বলে তাই করেছে। জনগনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রনে রাখার দক্ষতা দেখিয়েছে।
ত্রান বিতরণে দক্ষতা দেখিয়েছে প্রশাসন। মানুষের বাড়ী বাড়ি গিয়ে ত্রান পৌঁছে দিয়েছে সেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে। এমনকি নিজেরাই বহণ করে নিয়ে গেছেন ত্রান। যা নজির হয়ে থাকবে। প্রশাসনিকভাবে যে ত্রান বিতরণ করা হয়েছে তা নিয়ে দেশের কোথাও কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়নি। সেটাও প্রশংসার দাবীদার।
এতে করে মাঠ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছে এবং আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেছেন। যা অত্যন্ত মর্মান্তিক। তবে অকপটে এ কথা স্বীকার করতে হবে প্রথম পর্যায়ে কিছু অসহিষ্ণু মানুষকে নিয়ন্ত্রন করতে গিয়ে অনেকের সমালোচনার মুখে পরেছেন কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তা। কিন্তু বাস্তবতা হলো আমাদের দেশের অনেক মানুষ যে নির্বোধ এবং আত্মঘাতি তা দেশের মানুষ তা তখন অনেকেই বুঝতে পারেননি। এখন যা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছিলেন। মানুষ তখন সেটাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেছিলেন। এখন বোঝা যাচ্ছে এই নির্বোধ মানুষগুলোকে নিয়ন্ত্রনা করার জন্য বিকল্প কোন পথ খোলা ছিল না। করোনা কালে আমরা ভারতের মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন যে কঠোর ভূমিকা নিয়েছে আমাদের এখানেও সেটা নেয়ার প্রয়োজন ছিল।
সর্বোপরি জাতির এ সংকটকালে মাঠপ্রশাসন যে ভূমিকা রাখছে জাতি তা স্মরণ রাখবে বলে বিশ্বাস করি। মানুষের উচিত এই মাঠ প্রশাসনকে সহযোগিতা করা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে কোন কোন যায়গায় জনপ্রতিনিধিরা মাঠ প্রশসনকে সহযোগিতা করেনি। যা অত্যন্ত দু:খজনক। যার মাসুল দিতে হচ্ছে এখন সবাইকে। প্রত্যাশা হলো আগামী দিনগুলোতে মাঠ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা উচিত জনগনের। জনগনের সুরক্ষার জন্যই এটা করা উচিত।
রতন কুমার মজুমদার , অধ্যক্ষ , পুরানবাজার কলেজ চাঁদপুর।