লাখো মোমবাতি প্রজ্জ্বলনে ভাষাশহীদদের স্মরণ
অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’- এ স্লোগানে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে লাখো মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে ৫২’র ভাষাশহীদদের স্মরণ করলো নড়াইলবাসী।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ খেলার মাঠে এ ব্যতিক্রম আয়োজনের মধ্য দিয়ে ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করা হয়।
মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে বর্ণমালা, আলপনাসহ বাংলাদেশের নানান ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। সন্ধ্যায় কুরিরডোব মাঠের লাখো মোমবাতি একসঙ্গে জ্বলে ওঠে। একইসঙ্গে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এ গানের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গণসংগীত শুরু হয়। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা গানটি পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নড়াইল জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনজুমান আরা। ঘণ্টাব্যাপী এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন হাজারো দর্শক।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার (এসিপি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌরসভার মেয়র মো. জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, নড়াইল একুশের আলোর সভাপতি প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব ও নাট্য ব্যক্তিত্ব কচি খন্দকারসহ নড়াইলের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
সব কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে দু’দিন ধরে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবী লাখো মোমবাতি দিয়ে সাজিয়ে তোলে পুরো মাঠ। শুক্রবার সন্ধ্যায় মোমবাতিগুলো প্রজ্জ্বলন করে আলোকিত করা হয় নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের বিশাল মাঠ। প্রতি বছরের মতো একটি-দু’টি নয়, লাখো মোমবাতির আলোয় দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে চারিদিক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারসহ সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় করেন আয়োজকরা।
আয়োজকরা জানান, নড়াইল একুশ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে ভাষাশহীদদের স্মরণে ১৯৯৮ সালে নড়াইলে এ ব্যতিক্রমী আয়োজন শুরু হয়। প্রথমবার ১০ হাজার মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাষাশহীদদের স্মরণ করা হলেও প্রতিবছর এর ব্যপ্তি বেড়েছে। এবছর ৮ একর জায়গাজুড়ে এক লাখ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
বিশাল এ আয়োজন দেখতে প্রতিবারের মতো এবছরও দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ খেলার মাঠে এসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন উপভোগ করে।