দেনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সম্মানী নেব না : সাদিক
বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ মঙ্গলবার দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব নিয়েই নতুন মেয়র বলেন, করপোরেশনের ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা দেনা আছে বলে তিনি শুনেছেন। দেনার সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে করপোরেশনের দেনা যত দিন পরিশোধ না হবে, তত দিন তিনি কোনো সম্মানী নেবেন না।
নগর ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে বেলা সাড়ে তিনটায় মেয়র এবং নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা দায়িত্ব নেন। এরপর নগর ভবনের সামনে উন্মুক্ত মঞ্চে তাঁদের অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। এতে নগরের বিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিপুলসংখ্যক মানুষ যোগ দেন। এর আগে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন নতুন মেয়রের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, দেনা মাথায় নিয়ে দায়িত্ব নেওয়াটা তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জের মনে হয় না। তিনি আশা করেন, সঠিকভাবে সবকিছু পরিচালনা করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি ভালো করেই করপোরেশনের অবস্থা জানেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বরিশাল সিটি করপোরেশনে ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন, যা বরিশালের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
নগরের উন্নয়নের বিষয়ে সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, উন্নয়ন করার মতো অনেক কিছু আছে। তবে তিনি তা মুখে বলতে চান না। কাজ করে দেখাতে চান। নির্বাচনের আগে তিনি বারবার বলেছেন, নগরের বর্ধিত এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন। বস্তি ও নগরীর সড়কব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করবেন। বড় পরিকল্পনা হাতে নিয়ে নগরের বিভিন্ন পর্যায়ের উন্নয়নে হাত দেবেন।
সাদিক আবদুল্লাহ আরও বলেন, অতীতের দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। এতে কোনো মেয়র বা কাউন্সিলর জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি ভবিষ্যতে যদি তিনিও কোনো অনিয়মে জড়িয়ে যান, তবে তাঁর বিরুদ্ধেও যেন একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের আইন মেনে প্রত্যেককে কাজ করতে হবে। আমি সবাইকে আগেই বলে দিয়েছি, ভবিষ্যতে যাতে আমাকে মানুষের কাছে আর ভোট চাইতে না হয়, মানুষ যাতে আমাকে এমনিতেই ভোট দেন, সেভাবেই আমি কাজ করতে চাই।’
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস অভিষেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুচ, মহানগর পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেন, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইমামুল হক প্রমুখ।
গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী হন সাদিক আবদুল্লাহ। গতকাল সোমবার সকালে গণভবনে নবনির্বাচিত মেয়র হিসেবে তাঁকে শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরবর্তী সময়ে এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন। তদন্ত শেষে নির্বাচনের দুই মাস তিন দিন পর ২ অক্টোবর ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহ ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫৬ ভোট পান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার পান ১৩ হাজার ৭৭৬ ভোট।
সূত্র : প্রথম আলো।