• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর শহরে পৃথক দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু

প্রকাশ:  ২৫ জুলাই ২০১৮, ১০:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 চাঁদপুর শহরে পৃথক দুর্ঘটনায় গত চব্বিশ ঘন্টায় তিন জনের করুণ মৃত্যু হয়েছে। তিন জনই শ্রমজীবী মানুষ। পুরাণবাজরে চিনি ডেলিভারি দেয়ার সময় বস্তা চাপায় মরণ হাওলাদার (৩০) নামে এক শ্রমিক, অটোর ধাক্কায় চঙ্গা থেকে পড়ে মোস্তফা (৩৭) নামে বিদ্যুৎ কর্মী এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শুক্কুর (১৮) নামে এক রাজমিস্ত্রী নিহত হন। চাঁদপুর মডেল থানা, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ও নিহতদের স্বজন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তিনটি ঘটনায় স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার সবার মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। এসব ঘটনায়  সংশ্লিষ্ট থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এই পৃথক তিনটি দুর্ঘটনা ঘটে। আর এ তিনটি ঘটনাই চাঁদপুর শহরে ঘটে।
    গতকাল ২৪ জুলাই মঙ্গলবার বেলা সাড়ে বারোটার সময় চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের মেইন প্রবেশ গেইটের গ্রীল গেইট লাগানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শুক্কুর হোসেন নামে এক নির্মাণ শ্রমিক মারা যান। তিনি মতলব দক্ষিণ উপজেলার করবন্দ গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। নিহতের চাচা বিল্লাল হোসেন জানান, মহিলা কলেজে কাজ করতে গিয়ে তার ভাতিজা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। সাথের লোকজন তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লিখিত আবেদন করে পোস্টমর্টেম ছাড়া দাফনের জন্যে থানা থেকে লাশ বাড়িতে নিয়ে যাই।
    অপর দুর্ঘটনা দুটি ঘটে চাঁদপুর শহরের নিশি বিল্ডিং ও পুরাণবাজার এলাকায়। ২৩ জুলাই সোমবার মাগরিবের নামাজের পর নিশি বিল্ডিং এলাকায় জামাল মিয়ার বাড়ির বিদ্যুৎ লাইনের কাজ করার সময় অটোর ধাক্কায় চঙ্গা থেকে পড়ে মোস্তফা মিয়া (৩৭) নামে এক বিদ্যুৎ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তিনি পুরাণবাজার পূর্ব শ্রীরামদী পাটওয়ারী পুলের নিকট মিলিটারি সোনা মিয়ার ছেলে। নিহত মোস্তফার ভগ্নিপতি শহিদুল্লাহ জানান, তার শ্যালক ইলেক্ট্রিকের কাজ করেন। বিদ্যুতের ত্রুটি সারাতে চঙ্গার উপরে ছিলেন। এ অবস্থায় পাশ দিয়ে একটি আটোরিক্সা যাবার সময় চঙ্গাটিকে ধাক্কা দিলে মোস্তফা উপর থেকে নিচে রাস্তায় পড়ে যায় এবং মাথায় প্রচ- আঘাত পান। সাথে সাথে তাকে লোকজন হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা রেফার করেন। ওইদিন রাত সাড়ে আটটায় ঢাকায় নিয়ে যাবার সময় মতলবে তিনি মারা যান। নিহত মোস্তফার ৩ মেয়ে ও ১ শিশু পুত্র রয়েছে।  
    একই দিন (সোমবার) রাত সাড়ে আটটায় অপর দুর্ঘটনা ঘটে পুরাণবাজার দেওয়ান ঘাটে। কাইয়া পট্টির সুভাষ পোদ্দারের ঘর থেকে চিনির বস্তা ডেলিভারি দেয়ার সময় পা পিছলে বস্তা চাপা পড়ে মরণ হাওলাদার (৩০) নামে এক শ্রমিক নিহত হন। নিহত মরণ বাজার এলাকার দুধপট্টির আমির আলী হাওলাদারের ছেলে। তার দু’টি শিশু কন্যা রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সহদেব সাহার ঘরের শ্রমিক মনির বেপারী জানান, গোসল করার সময় নৌকার মাঝি জানায় আপনাদের একজন লোক বস্তা নিয়া পড়ে গেছে। সাথে সাথে গিয়ে তিনি তাকে উদ্ধার করেন। পরে ঘরের মহাজন তাকে চিকিৎসার জন্যে হাসপাতাল পাঠান। রাত ৩টা ৪০ মিনিটের সময় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে তিনি মারা যান।
    পুরাণবাজার ট্রাকঘাট লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কবির লস্কর জানান, নিহত শ্রমিকের স্মরণে বাজারের আমরা তিনটি শ্রমিক সংগঠন গতকাল ২৪ জুলাই মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে কালো ব্যাজ ধারণ করে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রেখে শোক কর্মসূচি পালন করি। সকল শ্রমিকের দাবির প্রেক্ষিতে ব্যবসায়ী, আমরা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশ কর্মকর্তারা বসে নিহত শ্রমিকের অসহায় পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করার আশ^াস দেন।