বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পৌর এলাকার কোড়লগাড়ী মহল্লায় প্রেমিক নজরুল ইসলাম জনি ওরফে রুবেলের (২৬) বাড়িতে বিয়ের দাবিতে গত দুই দিন যাবত অবস্থান নিয়েছেন দিনাজপুর থেকে আসা কলেজ ছাত্রী ও তার প্রেমিকা ফাহিমা খাতুন (১৯)। বিয়ে করে স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত প্রেমিকের বাড়ির দরজা থেকে উঠবেন না এমন প্রতিজ্ঞা তার।
প্রেমিকা ফাহিমা খাতুন জানান, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার কোড়লগাড়ী মহল্লার নূরুল ইসলামের ছেলে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে কর্মরত সেনা সদস্য নজরুল ইসলাম জনির (রুবেল) সাথে প্রায় এক বছর আগে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। অন্তরঙ্গতা বাড়তে থাকলে প্রেমের টানে তারা একে অপরের সঙ্গে বহুবার দেখা করেছেন এবং বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে।
তিনি আরো জানান, শনিবার ছিল প্রেমিক রুবেলের জন্মদিন। রুবেল নিজ বাড়িতে জন্মদিন পালনে প্রেমিকা ফাহিমা খাতুনকে আমন্ত্রণ জানালে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তিনি শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দিনাজপুর থেকে তার প্রেমিকের বাড়ি জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের কোড়লগাড়ী গ্রামে আসেন। তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা উভয় পরিবারের জানাজানির কারণে প্রথমে রুবেলের পরিবার ফাহিমা খাতুনকে স্বাগত জানায়। পরে দুজনের বিয়ের বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে সমঝোতা না হওয়ায় ফাহিমা খাতুনকে না জানিয়ে প্রেমিক রুবেল নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
অন্যদিকে তার পরিবারের লোকজন ফাহিমা খাতুনকে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে সে বিয়ের দাবিতে তার প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়। শনিবার রাত্রি ১০টায় ক্ষেতলাল থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
মেয়েটির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে এ সমস্যা নিষ্পত্তি করার পরামর্শ দিয়ে ক্ষেতলাল পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর সালমা বেগমের হেফাজতে রাখা হয় তাকে। কিন্তু এর নিষ্পত্তি না হওয়ায় বিয়ের দাবিতে ফাহিমা খাতুন রোববার সকাল থেকে পুনরায় প্রেমিক রুবেলের বাড়িতে অবস্থান নেন।
রোববার বিকালে ক্ষেতলালের কোড়লগাড়ী গ্রামে প্রেমিক রুবেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রেমিকা ফাহিমা খাতুন তাদের বাড়ীর দরজায় বসে স্ত্রীর অধিকার আদায়ে অবস্থান নিয়ে বসে আছেন। আর ওই বাড়ির দরজাটি রয়েছে ভেতর থেকে বন্ধ।
ফাহিমা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, গত দুই দিন থেকে স্ত্রীর দাবিতে এখানে অবস্থান করছি। স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমি কোথাও যাব না।
ক্ষেতলাল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরা নজরদারিতে রেখেছি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’