• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ড. শামছুল হক ভূঁইয়ার দুরকম মনোনয়নপত্র স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল!

প্রকাশ:  ২৮ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৫১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

গত ২৫ নভেম্বর চাঁদপুর-৪ আসন (ফরিদগঞ্জ) থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান বলে সংবাদকর্মীদের জানান ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া। দুপুর ১টার দিকে স্যোসাল মিডিয়ায়র টাইমলাইন জুড়ে ঘুরপাক খায় ফরিদগঞ্জের বর্তমান এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার মনোনয়নপত্র। একই ব্যক্তির দু’রকম মনোনয়নপত্রে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। উপর্যুপরি বেসরকারি টিভির সংবাদে প্রচারিত তথ্যে তাঁর নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সংশয়।
    দুপুর দেড়টা থেকে উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহু নেতা মনোনয়নপত্রের ছবি সহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস ছাড়তে থাকেন। তবে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া তার ফেসবুক পেইজ থেকে ‘সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী’ এই ক্যাপশনে মনোনয়নপত্রের ছবি আপলোড করেন। যদিও একই দিন বিকেল ৩টা ৩১ মিনিটে শামছুল হাক ভূঁইয়ার এক সফরসঙ্গী তিনিসহ ফেসবুকে ‘যাচ্ছি’ (ঢাকার উদ্দেশ্যে) ক্যাপশনে ছবি পোস্ট করেন। মনোনয়নপত্রের একই ছবি দুপুর ২টা ৫৯ মিনিটে ফেসবুকে পোস্ট করা হয় রুবেল সিএফজি নামক একটি আইডি থেকে।
    শামছুল হক ভূঁইয়ার ফেসবুক পেইজ থেকে ছাড়া মনোনয়নপত্র নকল বলে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। ছবিটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লোগোর স্থলে নকল লোগো বসানো হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লোগোতে নিচে দু’টি বিপরীতমুখী পাটের শীষ, মধ্যখানে দলীয় পতাকা এবং পতাকার উপরে গোল করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লেখা। কিন্তু ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার ফেসবুক পেইজের মনোনয়নপত্রের লোগোটির উপরের ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ লেখাটি পতাকার লাঠির উপর থেকে শুরু হয়ে এক দিকে বেঁকে গেছে!
    অথচ চাঁদপুরের বাকি চারটি আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্রেই এমন নকল লোগো লক্ষ্য করা যায়নি।
    মনোনয়নপত্র নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম সোহাগের ফেসবুক পোস্ট থেকে। তিনি দুপুর ১টা ১৭ মিনিটে মনোনয়নপত্রের দুটি ছবি পোস্ট করেন। যার মধ্যে একটি বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার ফেসবুক পেইজ থেকে ছাড়া ছবিটির অনুরূপ। অপরটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লোগো এবং দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষর ও সিল ঠিক থাকলেও মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তির ঘরে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার নাম নকল সংযুক্ত হয়েছে।
    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল মনোনয়নপত্রে সকল লেখা ‘সুটুনী এম.জে’ ফন্টে লেখা থাকলেও শুধুমাত্র ঐ মনোনয়ন পত্রটিতেই শামছুল হক ভূঁইয়ার নাম লেখা আছে মোটা অক্ষরে ‘ভিরিন্ডা’ ফন্টে! এ ছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্রে শামছুল হক ভূঁইয়ার নামের পূর্বে পূর্ণ মোহাম্মদ শব্দটি থাকলেও অন্য মনোনয়নপত্রে দেয়া হয়েছে সংক্ষিপ্ত মোহাম্মদ শব্দটি (মোঃ)। এছাড়াও ‘ড.’ ‘মোঃ’ এবং ‘শামছুল’ এই তিনটি শব্দের মধ্যে কোনো প্রকার স্পেস নেই। এই মনোনয়নপত্রের নিচে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নাম সম্বলিত সিলটিও রয়েছে কালো কালিতে। অথচ বাকি সকল মনোনয়ন পত্রেই শেখ হাসিনার সিল রঙিন কালিতে দেয়া। সারা বাংলাদেশের সকল মনোনয়নপত্রে ‘সুটুনী এম.জে’ ফ্রন্টের লেখা হলেও তার নির্বাচনী ফন্টে আলাদা ফন্ট কেন? সোস্যাল মিডিয়ায় এমন প্রশ্ন এখন অহরহ।
    জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া চাঁদপুর-৪ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বলে সংবাদ প্রকাশ পেলেও তার ত্রুটিহীন মনোনয়নপত্রটি এখনও সোস্যাল মিডিয়ায় আসেনি। দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হলেও দুপুর দেড়টার মধ্যে তিনি ফরিদগঞ্জ থাকাকালীন নেতা-কর্মীরা কোথায় পেলেন এমন মনোনয়ন পত্র-তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়েছে, একই সাথে সেই নকল লোগোযুক্ত মনোনয়ন পত্র শামছুল হক ভূঁইয়ার ব্যক্তিগত পেইজে কোথা থেকে আসলো তা নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি। মনোনয়ন যদি চূড়ান্তই হবে তবে দলীয় সভানেত্রীর স্বাক্ষর ও দলীয় লোগো নকল করে এমন বিভ্রান্তিকর মনোনয়নপত্র প্রচার হওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে জেলাবাসীর মধ্যে।
    এদিকে গতকাল বেসরকারি টিভিতে ‘সর্বশেষ’ টিকারে বা স্ক্রলে ‘চাঁদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল হক ভূঁইয়া ঋণ খেলাপির কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না’ এমন শিরোনাম ভেসে ওঠায় ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার নির্বাচনে অংশগ্রণ নিয়ে ধূ¤্রজাল ও সংশয় তৈরি হয়েছে।

 

সর্বাধিক পঠিত