চাঁদপুর মেঘনায় ডাকাতির ঘটনায় নিহত ৭, জানা গেছে পরিচয়
চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর পাড়ে মাঝির চর এলাকায় থেমে থাকা একটি জাহাজ থেকে আজ সোমবার বিকেল ৩টার দিকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া জাহাজ থেকে তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে আহতদের চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকেল ৪টার দিকে দুইজন মারা যান। তাদের সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। কারও কারও ছিল গলাকাটা।
নিহতরা হলেন : জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রীজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত একজনের নাম জানা যায় নি। আহত ও নিহত ব্যক্তিদের বাড়ি নড়াইল জেলায়।
এদিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর একজন কাগজে লেখেন যে, তার নাম জুয়েল। গলা আংশিক কাটা থাকায় তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
নৌ পুলিশের এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ৯৯৯-এ খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপারসহ একটি টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। যে জাহাজটিতে মরদেহ পাওয়া গেছে সেটির নাম এমভি বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজ। জাহাজটি মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে মাঝির চরে নোঙর করা অবস্থায় ছিল। ওই জাহাজের বিভিন্ন কক্ষে পাঁচজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় ছিল। চিকিৎসার জন্য তাদেরকে দ্রুত চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হলে তাদের মধ্যে দুজন মারা যান। একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। যাদের মরদেহ পাওয়া গেছে তাদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নৌ পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, জাহাজের মালিকের বক্তব্য অনুযায়ী সারবোঝাই জাহাজটি চট্টগ্রামের কাফলু থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে যাচ্ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি আজ সিরাজগঞ্জে এসে পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু জাহাজের খবর না পেয়ে জাহাজের মালিক অন্যান্য জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে অন্য জাহাজের কর্মচারীর মাধ্যমে তার জাহাজটি চাঁদপুরে মেঘনা নদীর পাড়ে আছে শুনে ৯৯৯-এ পুলিশকে জানান।
খবর পেয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক এবং কোস্ট গার্ডের দুইটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নৌ পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডের যৌথ অবস্থানে নিহতদের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন। এটি হত্যাকাণ্ড, নাকি ডাকাতি, নাকি তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নৌ পুলিশ দুটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।