নাদিয়া হত্যার শোকে স্তব্ধ কাদরা গ্রাম
ভয় ও আতঙ্কে স্কুলে যায়নি শিক্ষার্থীরা
শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের কাদরা গ্রামের মিয়া বাড়িতে প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী নাদিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া বর্বরোচিত পাশবিক নির্যাতন ও হত্যাকা-ের পর শোকে স্তব্ধ কাদরা গ্রামবাসী। ৭ নভেম্বর ময়না তদন্তের পর রাত ৯টায় মিয়া বাড়ি প্রাঙ্গণে শিশু নাদিয়ার নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ৮ নভেম্বর অধিকতর তদন্তের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহরাস্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল মান্নান ঘটনাস্থলে গিয়ে সবার সাথে কথা বলেন। এদিকে এলাকাবাসী ঘাতক মানিকের ফাঁসি দাবি করেন। এলাকার বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ পুলিশের কাছে এ বর্বরোচিত হত্যাকা-ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে এ ঘটনার জন্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এলাকাবাসী জানায়, ঘাতক মানিক এলাকার চিহ্নিত চোর, তার বাবা আঃ কাদেরও একজন চোর, মাদকের সাথে সম্পৃক্ত। ইউপি সদস্য মহরম আলী জানান, দুবছর পূর্বে মাদকের জন্যে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সে সময় ৬ মাস জেল খেটে বের হয় আঃ কাদের। তার ছেলে মানিক ১৫ দিন পূর্বে দিন-দুপুরে কাদরা বাজারে চুরি করে জনতার হাতে আটক হয়। এলাকাবাসী তাকে বেঁধে রাখে। পরে সকলের উপস্থিতিতে আর চুরি করবে না বলে ছাড়া পায়। ঘাতক মানিকের বাড়ি খেড়িহর গ্রামে। প্রায় ১০ বছর পূর্বে সে তার নানার বাড়ি কাদরা নাসের বাড়িতে চলে আসে। তার নানা মকবুল হোসেনের সাথে মাঝে মধ্যেই মিস্ত্রির কাজ করতো সে।
ঘাতক মানিকের মামা জহির জানান, তিনি ৭ বছর পূর্বে বিদেশ থেকে দেশে আসেন। ভাগিনা মানিকের উশৃঙ্খল কর্মকা-ের জন্যে তার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখেননি তিনি। ইউপি সদস্য মহরম আলী খুনি মানিকের শাস্তি দাবি করেন। এলাকাবাসী মোঃ আবুল বাসার জানান, তিনি এ সংবাদ পেয়ে তার সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। নাদিয়ার দাদা রুহুল আমিন ও দাদী সাজেদা বেগম আদরের নাতনিকে হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন। তারা মানিকের ফাঁসি চেয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন। এ পাশবিক হত্যাকা-ের পর শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই জানান, ভয়ে তাদের সন্তানরা স্কুলে যেতে চায় না। তাই অনেক শিশুকে স্কুলে পাঠাননি অভিভাবকবৃন্দ। প্রবাসী আঃ কাদের তার দুমেয়ের জন্যে বিদেশে পাড়ি জমান। মেয়ের হত্যার পর তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।