• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

গাজীপুর আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার নতুন ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশ:  ৩০ জুন ২০২২, ১৩:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ফরিদগঞ্জে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ভবনের কাজ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ৫ সুতা রড ভালোটা ব্যবহার করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। এতে পুরো ভবনটিই হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরে গাজীপুর আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার চারতলা ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজটি পায় রিপন ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রিপন ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ ফারুক হোসাইন কর্মব্যস্ততার কারণে তার অনুপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটির হয়ে কাজটি করাচ্ছেন মোঃ সোহেলকে দিয়ে। কাজের সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একজন প্রকৌশলী উপস্থিত থাকার বিধান থাকলেও এখানে তার ব্যত্যয় ঘটেছে। ভবনের বিভিন্ন ঢালাইয়ের কাজে পিকেট ইট ব্যবহার করার কথা থাকলেও সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে দুই নম্বর ইট। ৫ সুতা রড মোটাটা লাগানোর কথা থাকলেও সেখানে লাগানো হচ্ছে চিকনটা। এ অবস্থাতেই বিভিন্ন ঢালাইয়ের কাজ হচ্ছে।
গত কয়দিন উপজেলার গাজীপুর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় এ ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন রকম কানাঘুষা হতে দেখা যায়। পরে স্থানীয় মেম্বার ও মাদ্রাসার ক’জন শিক্ষকের কাছে জানতে পেরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলমান কাজের পাশে কাজের নিয়ম সংক্রান্ত কোনো সাইনবোর্ড নাই। ভবন নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্যে প্রস্তুতকৃত ইটের মধ্যে অর্ধেকই দু নম্বর। ভবনের প্রথম তলায় চলমান কাজে ৫ ইঞ্চি রড (চিকন) লাগানো। যা মোটা সাইজের লাগানোর কথা।
এ সময় ঠিকাদারের কেয়ারটেকার ফরিদ আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার কন্ট্রাকটর ফারুক স্যার এ এলাকার ইট সরবরাহকারী মোতালেব হোসেন পাটোয়ারী নামের একজনকে ইট দেয়ার জন্যে বলেছেন। তিনিই মূলত ইটগুলো দিয়েছেন। সকালে এক গাড়ি খারাপ ইট রিটার্ন পাঠিয়ে দিয়েছি। স্তূপাকারে হাজার হাজার ইটের মধ্যে প্রায় অর্ধেক ইটে ভেজাল আছে বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আবু সাঈদ বলেন, ইটগুলো আনার পর পরই আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। সকালে কিছু ইট ফেরৎ নিয়েছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা গিয়াস উদ্দিন সাহেব এ প্রতিনিধিকে ইটের বিষয়ে খারাপ ধারণা দিয়েছেন। মাদ্রাসার কাজে ৫ সুতা রড ভালোটা লাগানোর কথা থাকলেও এখন ভালোটা লাগানো হচ্ছে না বলে তিনি জানান। এ সময় ইটের কাছে আগন্তুক বিভিন্ন অভিভাবক এবং বাজারবাসী কাজের মান নিয়ে বিভিন্ন রকম মতামত পোষণ করেন।
ইট সরবরাহকারী মোতালেবের সাথে কথা হলে তিনি ইটের গুণগত মান নিয়ে নিজেই বিভিন্ন রকম অবান্তর মতামত প্রকাশ করেন।
ঠিকাদার ফারুক আহমেদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ব্যস্ততার কারণে আমি কাজের সাইটে কম যাই। যার কারণে অনেক কিছুই আমি অবগত না। স্থানীয় একজন ইট সরবরাহকারী ইটগুলো আমাকে দেয়। আপনাদের কাছ থেকে জেনেছি সেখানে দুই নম্বর ইট এসেছে। কথা দিচ্ছি, এই কাজে একটা দু নম্বর ইটও লাগাতে দেবো না।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মতিউর রহমান বলেন, চারতলা এই ভবনটি তৈরি করতে সম্ভবত ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বাজেট হয়েছে। কাজের গুণগত মানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ভবনটি দেখাশোনার দায়িত্বে চাঁদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে দেয়া হয়েছে। এখানে আমাদের কোনো দায়িত্ব নেই।
চাঁদপুর জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মোঃ ফাহিম ইকবালের সাথে কথা বলতে তার মোবাইল ফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমুন নেছা বলেন, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। যেহেতু আমাকে জানিয়েছেন, আমি খুব কম সময়ের মধ্যেই এর খবরাখবর নিবো।

 

সর্বাধিক পঠিত