সাউথ আফ্রিকায় নিহত মতলবের জিয়াউর রহমানের লাশ চায় পরিবার
মতলব দক্ষিণ উপজেলার দারিন্দা রসুলপুর গ্রামের মালেক সরকার বাড়ির জিয়াউর রহমান সরকার (৩২) সাউথ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। গত ২৩ জুলাই গভীর রাতে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী তাকে তিনটি গুলি করে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন জিয়াউর রহমান।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ জিয়াউর রহমান সাউথ আফ্রিকায় মুদি, স্টেশনারী, তৈলসহ বিভিন্ন ভ্যারাইটিজ মালামালের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এ বছরের ২১ জুন তিনি সাউথ আফ্রিকার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন। জিয়াউর রহমান সেখানে চাচাতো বোনের ছেলে কচুয়া এলাকার বাসিন্দা সুমনের সাথে পার্টনারশিপে ব্যবসা করতেন। তার পার্টনার সুমন তিনদিনের জন্যে তাবলীগ জামাতের সফর শেষ করে ঘটনার দিন ফিরে এসে বন্ধুর বাসায় রাতযাপন করেন। ভাগিনা সুমন তাবলীগে যাওয়ার পূর্বে বিপ্লব নামে এক কর্মচারী দোকানে নিয়োগ করেন। জিয়াউর রহমান সাড়ে তিন বছর পূর্বে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাদের সংসারজীবনে ঝিমিয়া নামে ১৮ মাসের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। জিয়াউর রহমানের পিতার নাম অলি উল্লাহ সরকার। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে জিয়াউর রহমান মেঝো। তার ছোট ভাই আরিফও সাউথ আফ্রিকায় ব্যবসা করেন।
নিহতের স্ত্রী তানজিনার চাচা হাসান জানায়, সাড়ে তিনবছর পূর্বে আমার ভাতিজিকে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক জিয়াউর রহমানের সাথে বিবাহ দেই। তার লাশ সাউথ আফ্রিকায় পোস্ট মর্টেমের জন্যে নেয়া হয়েছে। লাশ দেশে আনার জন্যে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। সন্ত্রাসীরা টাকা না নিয়ে শুধু হত্যা করেছে। এটা একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-।
স্ত্রী তানজিনা জানান, আমার স্বামীর কোনো শত্রু নেই। তিনি পার্টনারে ওইদেশে ব্যবসা করেন। ঘটনার দিন রাত ১০টায় স্ত্রীর সাথে মোবাইলে কথা হয়। এ সময় তিনি ব্যবসার ৪ লাখ টাকা তাকে দেখান এবং দোকানের দৈনিক বিক্রি প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকা বলে জানান। ওইদিন ১০/১২ জন সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে দোকানে আসে। তখন কর্মচারী বিপ্লব দোকানে ছিলো। আমার স্বামী দোকানের পেছনে ছিলো। সন্ত্রাসীরা এসে বিপ্লবকে জিয়ার কথা জিজ্ঞাসা করে এবং বিপ্লব দোকান মালিক জিয়াকে ডেকে দেয়। সন্ত্রাসীরা কোনো কিছু না বলে বিপ্লবের সামনেই আমার স্বামীকে তিনটি গুলি করে। সন্ত্রাসীরা বিপ্লবকে কিছু করেনি এবং দোকান থেকে মালামালও লুট করে নিয়ে যায়নি। আমার স্বামীকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তবে দোকানে সিসি ক্যামেরা ছিলো। ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। আমার স্বামীর লাশ বাংলাদেশে আনার জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। আমি ও আমার কন্যা তার মুখখানা শেষবারের মতো দেখতে চাই।