বহু গুণের অধিকারী নায়িকা মৌসুমী
চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে বলা হয় বাংলা চলচ্চিত্রের প্রিয়দর্শিণী। পুরো নাম আরিফা পারভিন জাহান মৌসুমী। অভিনয়ে তিনি কেমন পারদর্শী সেই ফিরিস্তিতে না-ই গেলাম। যে তারকার শোকেজে সাজানো তিনটি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’, তিনটি ‘মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার’ এবং তিনটি ‘বাচসাস পুরস্কার’, তার অভিনয় নিয়ে নতুন করে কি বলার আছে? অভিনয়গুণ ছাড়াও তার রয়েছে আরও একাধিক প্রতিভা। সেসব বিষয় নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা।
প্রযোজক মৌসুমী
অভিনয়ে আসার তিন বছরের মাথায়ই প্রযোজক হিসেবে নাম লেখান মৌসুমী। তার প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘গরীবের রানী’। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় এটি। ছবিতে নায়িকা হিসেবে অভিনয়ও করেন তিনি। ছবি প্রযোজনার লক্ষ্যে তিনি ১৯৯৬ সালে ‘কপোতাক্ষ চলচ্চিত্র’ নামের একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। একই বছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে মুশফিকুর রহমান গুলজারের পরিচালনায় ‘সুখের ঘরে দুখের আগুন’ এবং মনতাজুর রহমান আকবরের পরিচালনায় ‘বউয়ের সম্মান’ ছবি দুটি প্রযোজনা করেন। এরপর দীর্ঘ ১৯ বছরের বিরতির পর ‘আমি এতিম হতে চাই’ ছবির মাধ্যমে আবারও প্রযোজনায় ফিরে আসেন নায়িকা। মৌসুমীর সঙ্গে ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন ঋদ্দি টকিজ।
পরিচালক মৌসুমী
শুধু প্রযোজক নয়, ২০০৩ সালে ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন মৌসুমী। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে তিনি পরিচালনা করেন আলোচিত ছবি ‘মেহের নিগার’। যেটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ও করেন মৌসুমী। ২০১৬ সালে তিনি ‘শূন্য হৃদয়’ নামে একটি টেলিফিল্মও পরিচালনা করছেন।
গায়িকা মৌসুমী
মৌসুমীর মিষ্টি চেহারার ফ্লেভার রয়েছে তার কণ্ঠেও। ২০০৪ সালে জাহিদ হোসেন পরিচালিত ‘মাতৃত্ব’ ছবির একটি গানে প্রথম কণ্ঠ দেন তিনি। ২০০৭ সালে ইথুন বাবুর সুরে একটি গান রেকর্ডিং করেন মৌসুমী। এর পর ২০১৪ সালে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ‘তারকাঁটা’ ছবিতে ‘কি যে শূন্য লাগে তুমিহীনা’ শিরোনামের গানে কণ্ঠ দেন। এছাড়া মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের আরেক ছবিতে ‘মন যা বলে বলুক’ গানের গীত রচনা করেন বহু প্রতিভাধর এ অভিনেত্রী।
ফ্যাশন ডিজাইনার ও সবাজসেবক মৌসুমী
ফ্যাশন ডিজাইনার হিসাবেও বেশ খ্যাতি রয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রিয়দর্শিণীর। বর্তমানে তিনি ঢাকার বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের একটি পোশাক স্টল ‘লেভিস’ এর মালিকানার দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি একজন সমাজসেবকও। তিনি নিজের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘মৌসুমী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ দেখাশুনা করে থাকেন। এছাড়াও বাংলাদেশের শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনমত ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্প্রতি তিনি ইউনিসেফ অ্যাডভোকেটের দায়িত্ব পান।
১৯৯৩ সালে ব্লকবাস্টার ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন মৌসুমী। ওই ছবিতে তার নায়ক ছিলেন প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ। ক্যারিয়ারে দুই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। পারিবারিক জীবনে মৌসুমী নায়ক ওমর সানীর স্ত্রী। ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীন এবং মেয়ে ফাইজাকে নিয়ে তাদের সংসার। তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া