বখাটে কর্তৃক বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়
বালিয়ায় একটি পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ
তুলী আক্তার (১৫) নামের এক স্কুল শিক্ষার্থীকে বিয়ে করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তার পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৬ ডিসেম্বর শনিবার রাতে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়েনে ৩নং ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় শিক্ষার্থীর ঘরের দরজা, বিছানা, মশারি পুড়ে গেলেও কেউ হতাহত হয়নি। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মেয়েটির বাবা এই ঘটনায় উত্তর বালিয়া গ্রামের জনৈক কদর আলী মাঝির পুত্র বখাটে জুনায়েদ মাঝিকে (২২) অভিযুক্ত করে রোববার চাঁদপুর সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগে মেয়েটির বাবা ছোবহান শেখ জানান, আমার মেয়ে বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে স্কুলে যাওয়ার পথে জুনায়েদ মাঝি নামের এক বখাটে ছেলে প্রায় তাকে উত্ত্যক্ত করত। এক পর্যায়ে আমার মেয়েকে সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবে আমরা রাজি না হওয়ায় সে আমার মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে অথবা এসিড ঢেলে হত্যার হুমকি দেয়। তিনি আরো জানান, স্থানীয় জনতা বাজারে ছেলেটির কম্পিউটারের দোকান রয়েছে। আমার মেয়ে তার দোকানে ছবি প্রিন্ট করতে গেলে সেই ছবি দিয়ে সে বিভিন্ন খারাপ ভিডিও করে টিকটক বানিয়ে অনলাইনে ছেড়ে দেয়। আমাদের সন্দেহ বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে সহযোগীদের নিয়ে ঘরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
মেয়েটির মা সখিনা বেগম জানান, শনিবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক দেড়টার সময় হঠাৎ আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পেয়ে ঘুম থেকে চিৎকার করে জেগে উঠি। ঘরের দরজা থেকে আগুন বিছানার মশারিতেও লেগে যায়। এ সময় জীবন বাঁচাতে চিৎকার দিলে প্রতিবেশী লোকজন এসে বাইরে থেকে পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
স্কুল শিক্ষার্থী তুলি আক্তার জানায়, জুনায়েদ অনেকদিন ধরে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমি তার দোকানে ছবি প্রিন্ট করতে গেলে সেই ছবি দিয়ে সে আমার নামে বাজে ভিডিও বানিয়ে টিকটক করে ছেড়ে দেয়। তার কথায় রাজি না হওয়ায় আমার পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে বখাটে জুনায়েদের বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, এই ঘটনা সকালে জেনে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলে বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
তিনি বলেন, ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক । প্রশাসনের কাছে এর সঠিক তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে এই ইউনিয়নের আর কোনো বখাটে ছেলে এমন দুঃসাহস দেখাতে না পারে।
চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছি। লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষ দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।