চান্দ্রা ইউপি সদস্যের মাতলামি, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ, হামলা-ভাংচুর
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার জাহাঙ্গীর খানের মদ খেয়ে মাতলামির ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল, মেম্বারকে লাঞ্ছিত ও তার বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রোববার মধ্যরাতে চান্দ্রা ইউনিয়নের জব্বর ঢালী দোকান সংলগ্ন বেড়িবাঁধ রাস্তায় ও দঃ বালিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং ইউপি সদস্যের বাড়ি ঘেরাও করেন।
এলাকার উত্তেজিত জনতা ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর মেম্বারের বাড়িতে হামলার চেষ্টা করলে ঘটনাস্থলে থাকা ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটোয়ারী সবাইকে শান্ত করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজনের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে জাহাঙ্গীর মেম্বারের বসতঘরের ৫টি জানালার কাচ ভেঙ্গে ফেলা হয়।
খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার ওসি নাছিম উদ্দিনের নির্দেশে পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই লিটন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর খানের কুকর্ম ও মদ খেয়ে মাতলামি করার ঘটনা পুলিশকে অবহিত করেন। মেম্বারের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশের ডোবা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে।
আওয়ামী লীগ নেতা নাছির মাঝি জানান, প্রতিদিন রাতে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর খান তার দুই সহযোগীকে সাথে নিয়ে পুরাণবাজার মদের কাউন্টারে গিয়ে মদ পান করে এলাকায় এসে মাতলামি করে। গত দুইদিন পূর্বে সে অতিরিক্ত মদপান করে তার লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারো জাহাঙ্গীর খান মদ খেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে এসে মাতলামি শুরু করে। এ সময় তার মোটর সাইকেলের পিছনে একটি অপরিচিত মেয়ে বসা ছিল।
এলাকার প্রতিবাদী লোকজন মদ খেয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করলে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর খান ঘটনাস্থল থেকে পালাতে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজন তার বাড়ি ঘেরাও করলে অবশেষে ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানান, নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে জাহাঙ্গীর মেম্বার, এর প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর খান জানান, তিনদিন পূর্বে জব্বর ঢালী দোকানের পশ্চিম পাশে একটি গরু বোঝাই ট্রাক পড়ে যায়। এই গাড়িটি চান্দ্রা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের লোকজন সহযোগিতা করে রাস্তার পাশ থেকে উঠিয়ে দেয়। এ সময় পাশের গ্রামের কিছু যুবক চাঁদা দাবি করলে তাদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় রোববার রাতে সালিস বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা আর হয়নি। সে সময় আমার ছেলে মেহেদুল আলমকে মারধর করায় এর প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে।
ইউপি চেয়ারম্যান খানজাহান আলী কালু পাটোয়ারী জানান, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর মেম্বারের বাড়িতে হামলার খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। তবে সদস্যকে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি উভয় পক্ষের কাছ থেকে জেনে প্রকৃত বিষয়টি বলা যাবে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে আবারও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তাই প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।