ফরিদগঞ্জে নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা আটক ১
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের ধোপা বাড়ির প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ দাসের স্ত্রী অঞ্জলী দাস (৬০) কে নিজ বসত ঘরেই গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের ভাই অমর কৃষ্ণ দাস বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের (নং- ২৫, তারিখ ২২-৭-২০২০) করেছে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজাদ নামে এক যুবককে আটক করেছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, গত মঙ্গলবার দুপুরের পর খাজুরিয়া গ্রামের ধোপা বাড়ির প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ দাসের বিধবা স্ত্রী অঞ্জলী দাসের ছোট বোন পূর্ণিমা ও বোনের জামাতা খোকন লক্ষ্মীপুর থেকে নিহতের বাড়িতে বেড়াতে এসে ঘরের দরজায় তালা মারা দেখতে পান। বাড়ির কেউই কোথায় গিয়েছে তা না জানেন না। এমতাবস্থায় ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে ঘরের ভিতরে মেঝেতে অঞ্জলীর রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। এ দৃশ্য দেখে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এসেও তালাবদ্ধ ঘরের ভিতরে লাশ দেখতে পায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহআলমকে ঘটনা জানালে তিনি পুলিশকে সংবাদ দেন। পুলিশ এসে রাতে দরজার তালা খুলে লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার বিকেলের পূর্বে যে কোনো সময় এ ঘটনাটি ঘটায় দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ জানায়, সুরতহাল রিপোর্টে দেখা গেছে ওই নারীর গলা কাটার সাথে সাথে একটি হাতও কাটা রয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও সিআইডির একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্রাইম সিন সংগ্রহ করেছে। নির্মম হত্যাকা-টির সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিবসহ পুলিশ ফোর্স রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) আফজাল হোসেনকে জানালে তিনি বিষয়টি স্পর্শকাতর মনে হওয়ায় পিবিআই ও সিআইডিকে অবহিত করেন। পরে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে অপরাধের আলামত সংগ্রহ করেন।
নিহতের ভাই অমর কৃষ্ণ দাস জানান, প্রায় এক বছর পূর্বে তার বোন অঞ্জলীর স্বামী ইন্দ্রজিৎ মারা যান। একমাত্র ছেলে আশীষ দাস মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত প্রবাসী। তার বোন বাড়িতে একাই থাকতেন। সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে বুধবার সকালে ফরিদগঞ্জ থানায় নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তিনি আরো জানান, তার বোনের সাথে কারো কোনো ঝগড়া বা শত্রুতা নেই। কে বা কারা এবং কেনো তার বোনকে নির্মমভাবে হত্যা করলো তা বুঝতে পারছেন না। তবে যে বা যারাই এই ঘটনা করেছে তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে আটকের দাবি জানান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নূরুল ইসলাম জানান, ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে তিনি হত্যাকা-ের কথা শুনেই ঘটনাস্থলে গিয়েছন। এছাড়া মামলাটির তদন্তকার্য তার উপর ন্যাস্ত হওয়ায় তিনি তদন্ত শুরু করেছেন। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজাদ নামে একজনকে আটক করেছেন।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব জানান, নির্মম এই হত্যাকা-ের রহস্য দ্রুত উদ্ঘাটনে তিনি কাজ করছেন। ঘটনাস্থলে গিয়েই পরিস্থিতি বুঝে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে পিবিআই ও সিআইডিকে সম্পৃক্ত করার চিন্তা করেন। সেই মোতাবেক দুইটি টিমই ঘটনাস্থলে এসে অপরাধের আলামত সংগ্রহ করেছে।