চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নে ধর্ষণে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ৫ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী (১৩) কে জোরপূর্বক অবৈধ গর্ভপাত করানো হয়। শুধু তাই নয়, অসহায় স্কুলছাত্রীর পরিবারকে আইনের আশ্রয় না নিতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্ত ধর্ষক জাহাঙ্গীর দর্জি (৪০)কে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর নির্দেশে মডেল থানা পুলিশের এসআই রেজাউল করিম, সেলিম, শাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকশ টিম শহরের বাবুরহাট এলাকা থেকে তাকে আটক করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদ পারভেজ চৌধুরী। এ বিষয়ে কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আনন্দবাজার এলাকার বেপারী বাড়ির ৫ শ্রেণির স্কুলছাত্রীটিকে প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পাশ্ববর্তী জাহাঙ্গীর দর্জি। হতদরিদ্র পরিবারের অসহায় শিশুটি স্থানীয় আব্দুল আওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।
এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি শালিসি দালাল চক্র ছলনার আশ্রয় নিয়ে কিশোরীর পরিবারকে প্রথমে ক্ষতিপূরণ দেবার কথা বলে আইনের আশ্রয় নেয়া থেকে বিরত রাখে। এরপর শহরের একটি হাসপাতালে এনে শিশুটির জোরপূর্বক অবৈধ গর্ভপাত করায়। গর্ভপাত করানোর পর থেকেই শালিসি দালাল চক্রটি সুর পাল্টে কিশোরীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। যাতে করে তারা আইনের আশ্রয় না নেয়।
কিশোররে মা বলেন, আমার শিশু মেয়েটিকে প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জাহাঙ্গীর দর্জি বহুবার ধর্ষণ করে। পরে তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে জিজ্ঞেস করলে সে বিষয়টি স্বীকার করে। পরে লম্পট জাহাঙ্গীরেরর স্ত্রীর এসে আমার মেয়েকে চাঁদপুরে নিয়ে গর্ভপাত করায়।
মনোয়ারা বেগম আরো জানায়, আমি বিষয়টি ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুহুল আমিন সুকদার, ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও আব্দুল আওয়াল সপ্রাবির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফা মাল, বিএনপি নেতা হাসান দেওয়ানসহ স্থানীয়দের জানিয়েছি। আমরা অসহায় বলে বিচার পাচ্ছি না। আমরা যাতে মামলা না করি, তার জন্যে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি এই লম্পটের বিচার চাই।
ধর্ষণের শিকার শিশুটি বলে, সে বাড়ির পাশে খেলতে গেলে জাহাঙ্গীর দর্জী তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং আমার মুখ চেপে খারাপ কাজ করে। এরপর সে আমাকে ভয় দেখিয়ে আরো কয়েকবার এই কাজ করেছে। আমি যাতে কাউকে না বলি এ জন্যে ভয় দেখিয়েছে।