• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী খুন, শাশুড়ি-শ্যালক আহত

প্রকাশ:  ১৪ মে ২০২০, ০২:৫৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ফরিদগঞ্জে শ্বশুর বাড়িতে এসে ক্ষিপ্ত জামাই ছুরিকাঘাত করে স্ত্রীকে হত্যা এবং শাশুড়ি ও শ্যালককে গুরুতর জখম করেছে। গতকাল ১৩ মে বুধবার ইফতারের কিছু সময় পূর্বে উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকারী জামাই আল মামুন মোহন (৩২)কে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এলাকাবাসী। জামাতা আল মামুনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলায়। নিহত স্ত্রী গৃদৃকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ডিগ্রি বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিনা আক্তার রিতু (২০) এবং গুরুতর আহত শাশুড়ি পারভীন আক্তার (৪৫) ও শ্যালক প্রান্ত (১৭)। পুলিশ রাতেই পোস্টমর্টেমের জন্যে নিহত রিতুর লাশ উদ্ধার করেছে।

অপরদিকে গুরুতর আহত শাশুড়ি পারভীন আক্তার চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন এবং শ্যালক প্রান্ত গৃদকালিন্দিয়া বাজারে চিকিৎসা নিচ্ছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, আড়াই বছর পুর্বে রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মনতাজ মাস্টারের ছেলে আল মামুন মোহন ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া গ্রামের খান বাড়ির সেলিম খানের মেয়ে তানজিনা আক্তারকে বিয়ে করে। বিয়ের পর সৌদি আরবে গেলেও গত দেড় বছর পূর্বে আল মামুন মোহন সৌদি আরব থেকে ফেরৎ আসে। এরপর থেকে এলাকায় বেকার অবস্থায় রয়েছে। ১৩ মে বুধবার বিকেলে সে তার নিজ বাড়ি রায়পুর থেকে শ্বশুর বাড়ি গৃদকালিন্দিয়া আসে। ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রিতুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এক পর্যায়ে মেয়ের আর্তচিৎকারে মা পারভীন আক্তার ও ভাই প্রান্ত এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ছুরিকাহত করে মোহন। এ সময় সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

এলাকার লোকজন দ্রুত রিতু ও তার মাকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক রিতুকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পারভীন আক্তারকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া রিতুর আহত ভাই প্রান্ত গৃদকালিন্দিয়া বাজারে চিকিৎসা নেয়।

নিহত রিতুর মামী তাছলিমা বেগম জানান, সৌদি আরব থেকে মোহন চলে আসার পর বেকার অবস্থায় ছিলো। বিয়ের সময় রিতুকে দেয়া স্বর্ণালঙ্কার সবকিছু বিক্রি করে ফেলে সে। তার বাড়িতে বসবাস করার জন্যে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় রিতু স্বামীর বাড়িতে যেতে চাইতো না। সে বাপের বাড়ি থেকেই পড়ালেখা করতো। এসব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে রিতুকে হত্যা করে এবং তার মা ও ভাইকে আহত করে মোহন।

ঘাতক মোহন ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় জানায়, তার স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত। তার প্রবাস থেকে পাঠানো সকল অর্থ তারা আত্মসাৎ করেছে। তাকে পাত্তা দিতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে ছুরিকাহত করেছে।

ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই কাজী মোঃ জাকারিয়া ঘটনাস্থল থেকে মোহনকে আটক করে এবং পোস্টমর্টেমের জন্যে লাশ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রকিব জানান, নিহত রিতুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক মোহনকে আটক করা হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

সর্বাধিক পঠিত