বাকিলায় ইদ্রিস হত্যায় আটক ২
হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের ছয়ছিলা গ্রামের ইদ্রিস (৩৫) হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বড়ভাই কুদ্দুস। ঘটনার দিন রাতে হওয়া এ মামলায় পুলিশ ওই রাতেই আসামী মা-মেয়ে দুজনকে আটক করে। একই মামলার আসামী বাবা-ছেলে ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। এরা সবাই ইদ্রিস হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। আসামীরা হলো ওই বাড়ির স্বামী-স্ত্রী শাহজাহান ও হাজেরা এবং এ দম্পতির ছেলে বাবু ও মেয়ে কুলসুমা। পুলিশ হাজেরা আর কুলসুমাকে আটক করেছে।
এদিকে ঘটনার পরের দিন গতকাল সোমবার বেলা আনুমানিক ৪টার দিকে ময়না তদন্ত শেষে ইদ্রিসকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আসামী শাহজাহান আর নিহত ইদ্রিস একই বাড়ির বাসিন্দা এবং সম্পর্কে চাচাতো ভাই। বাড়ির পুকুরে সেচ পাম্প বসানো নিয়ে মারামারীর ঘটনায় ইদ্রিস নিহত হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। ইদ্রিস ছয়ছিলা গ্রামের বকাউল বাড়ির শহীদ বকাউলের ছেলে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেলে ছয়ছিলা গ্রামের বকাউল বাড়ির পুকুরে পানির সেচ মেশিন বসানো নিয়ে শাহজাহান ও কুদ্দুসের পরিবারের মাঝে ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে শাহজাহান ও তার পরিবারের অন্যরা কুদ্দুসের ভাই ইদ্রিসকে ঘরে বেদম মারধর করে। এতে ইদ্রিস ঘটনাস্থলেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শাহজাহানের বসতঘর ঘিরে রাখে স্থানীয়রা। আর ইদ্রিসকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েপাঠায়। ততক্ষণে ইদ্রিস মারা যান। এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ থেকে ইদ্রিস নিহতের খবর এলাকায় পেঁৗছলে শাহজাহান ও তার ছেলে কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) আফজাল হোসেন, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী ওই বাড়িতে পেঁৗছে এলাকাবাসীকে শান্ত করেন। এ সময় শাহজাহানের স্ত্রী ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাতে দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী হওয়ায় তাদেরকে এ মামলার আসামী হিসেবে আটক দেখানো হয়।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী বলেন, সোমবার দুপুরের কিছু পর আমরা ইদ্রিসকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করেছি। ইদ্রিস অত্যন্ত শান্ত-ভদ্র প্রকৃতির ছেলে ছিলো। তার মৃত্যুতে এলাকাবাসী যেভাবে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিলো, সেদিন রাতে আমরা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে না গেলে আরো অন্যকিছু ঘটতে পারতো।
থানা পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত ইদ্রিসের শরীরের বাহ্যিক অংশে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে বেশকিছু স্থানে লীলা-ফুলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত মারধরের কারণে অভ্যন্তরীণ ইনজুরিতে মারা যেতে পারে ইদ্রিস।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন রনি জানান, ইদ্রিস হত্যায় এজাহারভুক্ত ৪ আসামীর মধ্যে ২ জনকে হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আটক করা হয়েছে। বাকিদেরকে আটকের জন্যে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।