শাহরাস্তিতে দেড় বছর পর কবর থেকে গৃহবধূ ইতির মরদেহ উত্তোলন
দাফনের দেড় বছর পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে শাহরাস্তির গৃহবধূ মেহজাবিন সুলতানা ইতির মরদেহ। চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ জামাল হোসেনের নির্দেশে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিনা আক্তারের উপস্থিতিতে গতকাল ৫ জানুয়ারি বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইন্সপেক্টর মোঃ আব্দুল মান্নান। মরদেহ উত্তোলনকালে উপস্থিত থেকে সহায়তা করেন শাহরাস্তি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আব্দুল আউয়াল ও গোলাম মোস্তফা। স্থানীয় উৎসুক জনতা এ সময় ভিড় জমায়। মরদেহ উত্তোলনকালে ইতির পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ জুন সন্ধ্যায় (বিয়ের ২ মাস ১৮ দিনের মাথায়) স্বামীর বাড়ি শাহরাস্তি উপজেলার মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নের মালরা মজুমদার বাড়িতে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় পৌরসভাধীন ঘুঘুশাল গ্রামের আমির হোসেনের কন্যা মেহজাবিন সুলতানা ইতির। ওই ঘটনায় ২৪ জুন একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়। পরবর্তীতে ২৮ জুন নিহতের ভাই নূরে আলম বাদী হয়ে ৪জনকে আসামী করে শাহরাস্তি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
৪ বার মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিবর্তন শেষে শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জের গণমানুষের নেতা মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের হস্তক্ষেপে ১৪ নভেম্বর সিআইডি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোঃ আবদুল মান্নানকে তদন্তভার ন্যাস্ত করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ কুতুব উদ্দিনের সার্বিক দিক নির্দেশনায় ২৪ নভেম্বর ইতির স্বামী ইকরামুল হক রাজুর রিমান্ড মঞ্জুর ও কবর হতে লাশ উত্তোলন পূর্বক পুনঃময়না তদন্তের জন্য বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হয়। আদালত জেল গেটে ৫ দিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিলে জিজ্ঞাসাবাদে রাজু ইতি হত্যার সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে। পরবর্তীতে চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শফিউল আযমের আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
পরবর্তীতে গত ১৬ জানুয়ারি চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ জামাল হোসেন মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের জন্য কবর হতে নিহত ইতির মরদেহ উত্তোলন করে পুনরায় ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন।