ফরিদগঞ্জে ভূমিদস্যুদের হামলায় ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তছলিমসহ ৫ জন গুরুতর আহত ॥ আটক ৩
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এক মুক্তিযোদ্ধার জমি জোরপূর্বক দখল করতে নিলে তাদের বাধা দিলে ভূমিদস্যুরা হামলা চালিয়েছে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তসলিম আহম্মেদের (৪২) উপর। এতে ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল ৪ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে উপজেলার ১৬নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডস্থ গৃদকালিন্দিয়া বাজারে জুমার নামাজের সময় ভূমিদস্যু বাচ্চু খানের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতরা হলেন : চরমান্দারী গ্রামের নুরুল হকের পুত্র ছলেমান (২৮), উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তছলিম, তাঁর মেঝো ভাই আব্দুল কাদের খোকন মেম্বার (৫২), ভাগিনা মেহেদী হাসান তুষার (২০) ও মুক্তিযোদ্ধা অলি উল্লাহর স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৪৫)। এরা প্রত্যেকে গুরুতর আহত হয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এদের মধ্যে মর্জিনা বেগম ছাড়া অন্যরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এদিকে হামলার ঘটনার খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ও চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে যায়। ফরিদগঞ্জ থানার এসআই মোঃ ইলিয়াস ঘটনাস্থল থেকে হামলাকারী তৌফিক আহমেদ, মহিউদ্দিন ও নবীর হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই মুক্তিযোদ্ধা অলি আহমেদ বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫/১৬ জনের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
আহতরা জানান, মুক্তিযোদ্ধা অলি উল্লাহ দীর্ঘদিন পূর্বে একই এলাকার মৃত সিরাজ খানের পুত্র বেলায়েত খানের কাছ থেকে দেড় শতাংশ জমি ক্রয় সূত্রে ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু বেলায়েত গং সেই বিক্রি করা জমি তাদের মালিকানা দাবি করে বেশ কবার জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালায়। এ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বেশ কবার সালিস হয়।
এদিকে গত ১০/১২ দিন পূর্বে এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু মাসুদ হোসেন বাচ্চু ও বেলায়েত গং পুনরায় সেই জমি দখল করতে গেলে স্থানীয়রা গত বুধবার সালিসের মাধ্যমে তা মীমাংসা করবেন বলে নির্ধারণ করেন। কিন্তু বাচ্চু ও বেলায়েত গং তাদের পরিবারের লোক অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে বুধবারের সালিস ৫ জুলাই শনিবার করার কথা জানায়। এরই ফাঁকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে যখন সবাই জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে যায়, সেই সুযোগে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা মুক্তিযোদ্ধা অলি উল্লাহর জমি দখল করতে যায়। এ সময় অলি উল্লার স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাধা দিয়ে ডাক চিৎকার করলে নামাজ শেষে উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান তসলিম আহম্মেদসহ অন্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শনিবার এ বিষয়ে সালিস আছে বলে তাদের জমি দখলে বাধা প্রদান করেন। আর তখনই বশির উল্লার পুত্র মাসুদ হোসেন খান বাচ্চু, সিরাজ খানের পুত্র বেলায়েত হোসেন খান, রাজিব খান ও মোহন খানের পুত্র তুহিন খানসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সবাই মিলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে মেহেদী হাসান তুষারের মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়, ছলেমানের হাত ভেঙ্গে গিয়ে দুটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, আবদুল কাদের খোকনের পা ভেঙ্গে যায় এবং ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তছলিমের হাতে ও শরীরে প্রচ- আঘাত পান। হামলাকারীরা ঘটনার সময় দেশীয় ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে।
খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কিছু ভূমিদস্যু পালিয়ে গেলেও ৩ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। আহতদের স্বজনরা তাদেরকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।