• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে ১১২ জন গরিব মানুষের সঞ্চিত টাকা পরিশোধে ইউপি চেয়ারম্যান-সচিবের দ্বন্দ্ব

প্রকাশ:  ২৬ জুন ২০১৯, ০৮:৫৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ফরিদগঞ্জের ১৬নং দক্ষিণ রূপসা ইউনিয়নের ১শ’ ১২ জন গরিব মানুষের সঞ্চিত মোট ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬শ’ টাকা বুঝে পাচ্ছে না স্থানীয় মহিলা অধিদপ্তর। ভিজিডি কার্ডের অনুকূলে বিনামূল্যে সরকারি চাল নিতে এসে গরিবের সঞ্চিত ওই অর্থের সব টাকা গত ৪ মাসেও পাওয়া যায়নি। যে কারণে প্রাপ্য ওই টাকা যথাসময়ে দিতে না পারায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে গরিব ও অসহায়রা।
গরিবের সঞ্চিত ওই টাকা পরিশোধ না করায় উক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখন দুষছেন সাবেক ইউপি সচিব গোলাম মোস্তফা শামিমকে। আবার সচিব শামিম দুষছেন চেয়ারম্যান মোঃ ইসকান্দার আলীকে। এ নিয়ে যেন ‘পাটায় পুতায় ঘষাঘষি, মরিচের দফা শেষ’ এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গরিবের জন্যে সরকারের ভিজিডি কার্ডের অনুকুলে প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৩০ কেজি চাল নেয়ার সময় প্রত্যেকে সঞ্চয় হিসেবে ২শ’ টাকা দিতে হয়। অর্থাৎ ওই টাকা প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ফরিদগঞ্জের মহিলা অধিদপ্তরে জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এই টাকা মহিলা অধিদপ্তর ও ইউএনও-এর যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংকে জমা রাখা হয়। দু বছর পর ব্যাংক থেকে গরিবের সঞ্চিত ওই টাকা তুলে প্রত্যেককে প্রদান করে উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬নং দক্ষিণ রূপসা ইউনিয়নে গরিবের মাঝে বিনামূল্যে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে সরকারি চাল দিতে মোট ১শ’ ১২ জনের নামে ভিজিডি কার্ড রয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কার্ডধারী প্রত্যেকে ২শ’ টাকা করে জমা দিলে সঞ্চিত টাকার পরিমাণ গত দু বছরে মোট ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬শ’ টাকা হয়। এই টাকার মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বুঝে পেয়েছেন মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাকছুদা আকতার। বাকি ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬শ’ টাকা গত ৪ মাসেও পাননি। এই টাকা পেতে প্রতিনিয়ত অসহায় ও গরিব নারী-পুরুষ কখনো ধর্ণা দেয় ইউনিয়ন পরিষদে আবার কখনো ফোন করে মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে।
এ নিয়ে সাবেক ইউপি সচিব গোলাম মোস্তফা শামিম জানান, গরিবের সঞ্চিত টাকার ব্যাপারে চেয়ারম্যান বলতে পারবেন। নিজের ছাড়পত্রের কাগজ দেখিয়ে তিনি বলেন, আমি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছি।  
বর্তমান সচিব রাবেয়া বশরী বলেন, এখানে আমি সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার সময় সাবেক সচিবের কাছ থেকে কোনো কিছুই পাইনি। চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় অফিসের সচিবের দায়িত্ব নিতে আমাকে অনেক ঝামেলা ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
১৬নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইসকান্দার আলী জানান, সাবেক সচিব গোলাম মোস্তফা শামিম আমার কাছ থেকে কোনো ছাড়পত্রই নেয়নি। আমার কাছ থেকে তার ছাড়পত্র নেয়ার বিষয়টি মিথ্যাচার ও প্রতারণা। আমি এ বিষয়ে অচিরেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। যথাসময়ে গরিবের সঞ্চিত টাকা সাবেক সচিব শামিম  দেয়নি। তবে এখন আমি গরিবের সঞ্চিত  টাকা  সহসাই  প্রদান করবো।
ফরিদগঞ্জের মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাকছুদা আকতার গতকাল মঙ্গলবার এ প্রতিনিধিকে বলেন, সকল ইউনিয়নের গরিবের সঞ্চিত অর্থের টাকা গত জানুয়ারি মাসেই দিয়েছি। শুধু ১৬নং দক্ষিণ রূপসা ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে গরিবের সঞ্চিত  ৫ লাখ ৩৭হাজার ৬শ’ টাকার মধ্যে এখনো ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬শ’ টাকা দেয়া যাচ্ছে না। এই টাকা পরিশোধের জন্য চেয়ারম্যানকে বারবার তাগাদা দিলে তিনি শুধু ‘দেই দিচ্ছি’ বলে সময় নিচ্ছেন। বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে ইউএনও স্যারকে অবহিত করেছি।

 

সর্বাধিক পঠিত