• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ২ নারীসহ ৩ জনকে নির্যাতনপূর্বক জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখার অভিযোগ

প্রকাশ:  ২৫ মার্চ ২০১৯, ১৩:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাখায়াত হোসেন রনি পাটওয়ারীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ২ নারীসহ ৩ জনকে নির্যাতন ও জোর পূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখায় চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে একই ইউনিয়নের দাসাদী গ্রামের বাসিন্দা  মোকলেছ গাজীর ছেলে শ্রমিক মোঃ মফিজ গাজী। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে। এ ঘটনায় চাঁদপুর সদর মডেল থানায় চেয়ারম্যান মোঃ শাখাওয়াত হোসেন রনি পাটওয়ারী, চেয়ারম্যানের সহকর্মী জিএম সফু গাজী ও কাউছার মোল্লার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
    ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকার এক সময়ের বাসিন্দা মোকলেছ গাজীর ছেলে শ্রমিক মোঃ মফিজ গাজী পারিবারিক ভাবে সম্পত্তি ভাগ-বাঁটোয়ারার পর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের সফরমালী দাসাদী গ্রামে গিয়ে প্রায় ৫ বছর যাবৎ তার মা রাশিদা বেগম ও স্ত্রী তিন্নি বেগমসহ বসবাস করে আসছেন। মফিজ গাজীর বড় ভাই হান্নান গাজী কোড়ালিয়া এলাকায় বসবাসকালীন একই এলাকার তার আত্মীয় চুমকি বেগমের সাথে টাকা-পয়সার লেনদেন ছিল। হান্নান গাজী দীর্ঘদিন যাবৎ সিএনজি স্কুটার চালক হিসেবে ঢাকায় অবস্থান করছেন। চুমকি বেগম হান্নান গাজীকে এলাকায় না পেয়ে তার ছোট ভাই মোঃ মফিজ গাজীর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান রনি পাটোয়ারীর শরণাপন্ন হয়ে তার টাকা তুলে দেয়ার জন্যে অভিযোগ করে। তারই প্রেক্ষিতে গত বুধবার সকাল ৯ টায় রনি পাটোয়ারী হান্নান গাজীর ছোট ভাই মফিজ গাজীকে ফোন করে তার বাড়িতে আসতে বলেন। চেয়ারম্যানের কথা মত মফিজ তার মা রাশিদা বেগম ও স্ত্রী তিন্নি বেগমসহ সেখানে যান। তারা যাওয়ার পরেই হান্নানকে না পেয়ে মফিজ গাজীকে টাকা পরিশোধ করার জন্যে চাপ প্রয়োগ করেন। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা মফিজকে ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরের রুমে নিয়ে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন এবং তিনটি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর দিতে বলেন। তিনি স্বাক্ষর দিতে অপারগতা স্বীকার করলে চেয়ারম্যান রনি পাটোয়ারী মোটা কাঠের রুলার দিয়ে মফিজ গাজী কে বেদম মারধর করেন। এ সময় মফিজের মা ও স্ত্রী প্রতিবাদ করলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করেন চেয়ারম্যান। নির্যাতনের আঘাত সইতে না পেরে অবশেষে মফিজ গাজী খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেন বলে জানান। পরে এলাকাবাসী গুরুতর আহত অবস্থায় মফিজ গাজীকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।
    এ ঘটনায় আহত মফিজ গাজী স্ট্যাম্প উদ্ধার করা ও নির্যাতনের ঘটনার ব্যাপারে বিচার চেয়ে চেযারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি পাটোয়ারীসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় বুধবার দুপুরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
    মফিজ গাজী জানান, বড় ভাইয়ের লেনদেনের বিষয়ে আমি জানি না। আমি মাকে নিয়ে দাসাদী গ্রামে আলাদাভাবে থাকছি। রনি পাটোয়ারী খবর দিয়ে নিয়ে সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আটকে রেখে   চেয়ারম্যানের সহকর্মী জিএম সফু গাজী ও কাউছার মোল্লা ও চেয়ারম্যান রনি পাটোয়ারী তিনজন মিলেই নির্যাতন করে স্বাক্ষর দেয়ার জন্যে বেদম ভাবে মারধর করেন এবং আমার সামনে মা ও স্ত্রীকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন।
    এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান রনি পাটোয়ারী বলেন, টাকা লেনদেনের বিষয়ে দুই পক্ষকে সাথে নিয়ে সালিসি বৈঠক করি। যার কাছে টাকা পাবে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ভাইকে হাজির করার জন্যে পাওনাদাররা তার কাছ থেকে অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। আমি তখন উপস্থিত ছিলাম।  তখন মফিজ আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আমার সাথে বেয়াদবি করার কারণে ঘটনার সময় উপস্থিত সকলে মিলে তাকে পিটিয়েছে।
    এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাছিম উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা করলে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা বুধবার ঘটেছে বলে ভিকটিম আমাকে জানায়। বৃহস্পতিবার চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।