পুলিশের প্রশংসনীয় সাফল্য
ব্যাংক কলোনীতে ডাকাতির ঘটনায় দশ ডাকাতের মধ্যে ৯জন গ্রেফতার
চাঁদপুর শহরের ব্যাংক কলোনীতে সংঘটিত আলোড়ন সৃষ্টিকারী ডাকাতির ঘটনায় দীর্ঘ ছয় মাস প্রচেষ্টার পর চাঁদপুর থানার পুলিশ দশজন ডাকাতের মধ্যে নয়জন ডাকাতকে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট ২০১৮ তারিখে রাত ৩টায় ব্যাংক কলোনীতে কমিউনিটি পুলিশের অঞ্চল-১৫-এর সভাপতি, চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক, প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খানের বাসায় এক দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতরা সংখ্যায় ছিল ১০ জন। ডাকাতরা গেইটের তালা ভেঙ্গে, জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতর প্রবেশ করে। ডাকাতদের পোশাক ছিল কালো। সবার পোশাক একই রকম; মুখোশ পরা ছিল। প্রত্যেকের হাতে রামদা, ছোরা, রিভলবার, চাপাতি, শাবল ইত্যাদি অস্ত্র ছিলো। ডাকাতরা পালাবার সময় কিছু অস্ত্র রেখে যায়। তারা ঘরে ঢুকেই অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান, তার স্ত্রী ও ছেলের হাত, পা, চোখ, মুখ বেঁধে ফেলে। বাসার সব স্টিল আলমারি ও ওয়ার্ডরোব্ ভেঙ্গে টাকা-পয়সা, স্বর্ণ, মোবাইল, ক্যামেরা ঘড়িসহ সর্বমোট আড়াই লাখ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
জানা যায়, ডাকাতদের নেতৃত্ব দেয় ওই এলাকার কমিউনিটি পুলিশের টহল বাহিনীর সদস্য মোখলেছ গাজীর পুত্র জিলানী। ডাকাতির সময় জিলানীকে গেইটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন কমিউনিটি পুলিশের অন্য দুইজন সদস্য। পুলিশ বাহিনীর কয়েকটি সংগঠন এই ডাকাতির তদন্ত করে। চাঁদপুর থানার পুলিশ ইন্সপেক্টর মোঃ সিরাজুল মোস্তফা আইও হিসেবে এই ডাকাতির তদন্ত করেন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ডাকাতির ৪/৫ দিন পর ৪ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদেরকে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করা হয়। ১৬৪ ধারায় তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা ডাকাতির কথা স্বীকার করে। এদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তারা বর্তমানে চাঁদপুর জেল হাজতে আছে।
বাদী অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান নাম উল্লেখ না করে চাঁদপুর থানায় জিডি করেন। এসব ডাকাত শহরের পূর্বাঞ্চলে বসবাস করে। এরা শুধু ব্যাংক কলোনীতেই নয়, শহরের বহু ডাকাতি, চুরি ও সন্ত্রাসের সাথে জড়িত। তারা মাদকের ব্যবসার সাথেও জড়িত। এরা জেলখানা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে জোর তদবির করছে। ব্যাংক কলোনীবাসী তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করেছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যাংক কলোনীতে কয়েকটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদের গ্রেফতারের পর ব্যাংক কলোনীতে চুরি, ডাকাতি অনেক কমে যায়।
পুলিশ বাহিনী এদের কাছে থেকে নগদ সতের হাজার টাকা আদায় করে এবং বাদীকে উক্ত টাকা ফেরৎ দেয়া হয়। বাকি টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধারের জন্য বাদীপক্ষ জোর দাবি করছে। কিন্তু আর কোনো টাকা ও খোয়া যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার করা যায়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, অন্য একজন ডাকাত বরিশালে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ডাকাতরা জেল হাজত থেকে মুক্তি পেলে তারা আবার অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়বে বলে এলাকাবাসী মনে করেন। তাই ডাকাতদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।