• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের যুগপূর্তি সভা

সৃষ্টিকর্তা যে কাজটি করেন পৃথিবীতে তাঁর মনোনীতরা বিচারপ্রার্থীদের সে সেবাই দিতে থাকেন : হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার

প্রকাশ:  ০২ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের যুগপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে কেক কাটা, আলোচনা সভা ও ফুলেল শুভেচ্ছা অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে গতকাল ১ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে সমিতি মিলনায়তনে যুগপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে ১০ কেজি ওজনের কেক কেটে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন প্রধান অতিথি সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার। অনুষ্ঠানে তাঁকে জেলা জজশীপের বিচারকগণসহ জেলা আইনজীবী সমিতি ও আইনজীবী সহকারী সমিতির নেতৃবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা ও দায়রা জজ মোঃ জুলফিকার আলী খাঁন। শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কামাল হোসেন।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আল্লাহ তায়ালা সকল কিছুর বিচার করে থাকেন। পৃথিবীতে তাঁর এ কাজটি করার জন্যে তিনি তাঁর প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন। সে জন্যই বলছি, আমাদের সৃষ্টিকর্তা যে কাজটি করেন, পৃথিবীতে তাঁর মনোনীতরা বিচারপ্রার্থীদের সে সেবাটিই দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, আইনজীবীদের সুদীর্ঘকালের আন্দোলনের কারণেই আজ বিচার বিভাগ পৃথক হয়েছে। আমরা বিচারকরা শৃঙ্খলাবদ্ধ। আমাদের গতির মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু আইনজীবীদের গতির মধ্যে থাকতে হয় না। আইনজীবী ও বিচারকদের সহযোগিতার কারণেই আজ বিচারপ্রার্থীরা তাদের নায্য বিচার পাচ্ছেন। বিচার বিভাগ পৃথক হয়েছে, আজ আমরা স্বাধীন। আজকের (১ নভেম্বর ২০০৭ সালে) এই দিন চিরভাস্বর, চির উজ্জ্বল দিন। আর এই বিচার বিভাগ পৃথিকীকরণের কারণে আজ আমাদেরও কাজের দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছে। ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর থেকে আমাদের দায়িত্ব বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিচার হচ্ছে ঐশ^রিক ব্যাপার। বিচারে ভালো কিছু করার জন্য প্রয়োজন বার ও বেঞ্চের সমন্বয়। আইনজীবী ও বিচারকরা হচ্ছেন একটি পাখির দু’টি ডানা। অর্থাৎ একটি পাখি তার দু’টি ডানার উপর ভর করেই চলে। বিচারপ্রার্থীদের জন্যে ন্যায় বিচার পৌঁছে দেয়াই হচ্ছে বিচারকের মূল দায়িত্ব। এর সাথে সাথে বিচারপ্রার্থীদের সেবা তো থাকবেই। তিনি বলেন, বিচারপ্রার্থী মানুষের প্রত্যাশা বেশি। তারা এখন আগের চেয়ে বেশি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে।  আমাদের লক্ষ্য থাকতে হবে বিচারপ্রাথীরা যেনো সুন্দরভাবে ন্যায়বিচার পায়।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুরে বিচারকদের সাথে আইনজীবীদের সুসম্পর্ক রয়েছে। আইনজীবীরাই হচ্ছেন একমাত্র বিচারকদের বিচারক। এখানকার আইনজীবীরা বলেছেন বিচার কাজের জন্যে এখানকার বিচারকরা অনেক ভালো। জেলা ও দায়রা জজসহ অন্য বিচারকরা যেনো ন্যায়বিচার করতে পারেন সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা করতে হবে। বিচার বিভাগ পৃথিকীকরণে আমরা জজরা কী পেয়েছি। আমরা পাওয়ার জন্যে আসিনি, আমরা দেয়ার জন্যে এসেছি। তিনি বলেন, বিচার কার্যক্রম হচ্ছে আত্মত্যাগের জায়গা। সৃষ্টিকর্তা যে কাজ করেন, পৃথিবীতে তাঁর মনোনীতরা বিচারপ্রাথীদের জন্যে সেই সেবা ও ন্যায় বিচার করে থাকেন। আমি ভালো কাজ করলে সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে ভালো কিছু আসবেই। বিচারকরা সঠিকভাবে কাজ করলে একদিন তার অব্যশই মূলায়ন হবে। মহান সৃষ্টিকর্তা বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকেন এবং একদিন সবার এই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।
জেলা জজশীপের সিনিয়র সহকারী জজ মোঃ সিরাজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নূরে আলম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডঃ শেখ মোঃ জহিরুল  ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ মোঃ শাহাদাত হোসেন। আইনজীবীদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ সেলিম আকবর, অ্যাডঃ আব্দুল লতিফ শেখ,  অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, অ্যাডঃ জহিরুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ সাইয়েদুল ইসলাম বাবু, জিপি অ্যাডঃ রুহুল আমিন সরকার, সাবেক জিপি অ্যাডঃ শেখ আবু সালেহ, জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গীতা পাঠ করেন রোটারিয়ান অ্যাডঃ গোপাল সাহা। অনুষ্ঠানে জেলা জজশীপের বিচারকসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।