• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ডু অর ডাই : বার এমসিকিউ পরীক্ষা ২০১৯

প্রকাশ:  ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:৪৯
মুরাদ মোর্শেদ
প্রিন্ট

পরীক্ষা চলে এলো অবশেষে। বার কাউন্সিলের নোটিশ থেকে ফরম ফিলাপের শেষ তারিখ জানা গেছে এবং সেখানে পরীক্ষার তারিখ উল্লেখ না থাকলেও ইনফরমাল সোর্স থেকে আমরা সবাই জানি যে, আগামী আনুমানিক ২২ নভেম্বর তারিখে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং ২২ সেপ্টেম্বর ফরম ফিলাপের সর্বশেষ তারিখ। সে অনুযায়ী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে সবাই দিশেহারা বিশেষত যারা কিনা বিশেষ কোনোই প্রস্তুতি নিতে পারেননি।

এই লেখায় আপনাদের জন্য পড়ার রুটিন তৈরি করে দিতে চাই। পড়াশোনার প্রস্তুতি বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়ে রাখতে চাই। আশা করি এটি আপনাদের ভালো কাজে দেবে।

তো, যারা নিজে পড়ার মতো রুটিন করতে চান তাদের জন্য এবার কথা বলা শুরু করি। প্রথমেই কিছু খেজুরে কথায় বিরক্ত না হয়ে পুরোটা ধৈর্য্য সহকারে পড়লে অনেক উপকৃত হবেন বলে আশা করি।

১. সামান্য পুরনো মদ
বার কাউন্সিলের ৭টি কোর্স লোকে দুইভাবে পড়ে। একটি শর্টকার্ট বা জনপ্রিয় রাস্তা হচ্ছে – ছোট সাবজেক্টগুলো আগে শেষ করা। যেমন-
১. সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন [১০ নম্বর]
২. তামাদি আইন [১০ নম্বর]
৩. সাক্ষ্য আইন [১৫ নম্বর]
৪. বার কাউন্সিল অর্ডার এন্ড রুলস [৫ নম্বর]

এই ৪০ নম্বর শেষ করে অন্যান্য বড় সাবজেক্টগুলো ধরে থাকে। সেক্ষেত্রে দণ্ডবিধিকে শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার দেয়; এবং এটাই সঠিক। এরপরে ফৌজদারি কার্যবিধি ও দেওয়ানি কার্যবিধি থেকে যতোটা পারা যায় ততোটা নম্বর এগিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়; কেননা এই বিষয় দুইটি তুলনামূলক কঠিন লাগে বেশিরভাগের কাছে।

দ্বিতীয় আারেকটি পন্থা অবলম্বন করে থাকে সাধারণত নিয়মিত পড়াশোনার মধ্যে যারা আছেন বা পর্যাপ্ত সময় যাদের আছে, তারা। তারা এপাশ থেকে ওপাশ বুঝে বুঝে গুছিয়ে পড়ে থাকেন সাধারণত। সেক্ষেত্রে আমার বরাবরের মতো পরামর্শ হলো এই ক্রমটি মেনে বিষয়বস্তু ধরে ধরে পড়ে যাওয়া –
১. দণ্ডবিধি
২. ফৌজদারি কার্যবিধি
৩. সাক্ষ্য আইন
৪. সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন
৫. দেওয়ানি কার্যবিধি
৬. তামাদি আইন
৭. বার কাউন্সিল অর্ডার ও রুলস

২. বিগত সালের প্রশ্ন বিষয়ে : অবাক হওয়া নিষেধ!
যাইহোক, যেভাবেই পড়েন না কেন আপনি, আপনার জন্য আরো কিছু তথ্য জানা আবশ্যক। যেমন, বিগত সালের প্রশ্নগুলো থেকে কতোটা কমন প্রশ্ন এসে থাকে এবং সেগুলোকে কীভাবে গুরুত্ব দিয়ে পড়বেন সে বিষয়ে একটি সাধারণ নির্দেশনা আছে আমার।

নির্দেশনাটি হলো – বিগত সালের প্রশ্নগুলো খুব ভালোভাবে পড়ে নেবেন শুরুতেই। কেননা, বিগত সালগুলোর প্রশ্ন থেকে গড়ে ৩০-৩৫% শতকরা হারে প্রশ্ন এসে থাকে। কখনো হুবহু একই প্রশ্ন আসে। আবার কখনো ঐ একই প্রশ্ন বা ধারা থেকে সামান্য ঘুরিয়ে ধারাভিত্তিক প্রশ্ন এসে থাকে।

উপরে বললাম যে, ৩০-৩৫ ভাগ প্রশ্ন কমন পাওয়া যেতে পারে; তবে এমনও সম্ভাবনা থাকে যে, ৬০-৭০ ভাগ প্রশ্নও কমন পেতে পারেন। ২০১৭ সালের পরীক্ষার প্রশ্নটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সেই পরীক্ষায় মোট ৬৪ ভাগ প্রশ্ন বিগত সাল থেকে এসেছে। তবে, বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ভিন্নতর ছিলো, যেমন বিগত সালগুলোতে আসা প্রশ্ন-সংশ্লিষ্ট ধারা থেকেই ধারাভিত্তিক প্রশ্ন এসেছে। কিন্তু, সবচে বড় সুবিধা এটাই ছিলো যে, বিগত সালগুলোর প্রশ্ন-সংশ্লিষ্ট ধারা থেকেই প্রশ্ন এসেছে ৬৪টি! আর, অবশিষ্ট ৩৪ টি ধারা একেবারে নতুন ধারা থেকে প্রশ্ন এসেছে। ধীরে ধীরে মনোযোগ দিয়ে নিচের দুইটি চার্ট মনোযোগ দিয়ে দেখে নিলেই অবশ্য সমঝদারকে লিয়ে ইশারাই কাফি।

আর নিচের ছকটিতে বিভিন্ন কোর্সের মোট ধারার সংখ্যা থেকে সর্বমোট কতটি ধারা থেকে প্রশ্ন এসেছে তার বিশ্লেষণ আছে। এই ছকটির দ্বিতীয় কলাম দেখলে আপনি হয়তো খুবই আশ্বস্ত হবেন যে, মাত্র অল্প কয়েকটি ধারা থেকেই এযাবৎ প্রশ্ন এসেছে! যেমন, দণ্ডবিধির ৫১১ টি ধারার ভেতরে থেকে মাত্র ৬২টি গুরুত্বপূর্ণ ধারা থেকে প্রশ্ন এসেছে। এরূপভাবে অন্যান্য কোর্সগুলো থেকেও প্রশ্ন-সংশ্লিষ্ট ধারার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশ কম। ফলে, বিগত প্রশ্নগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, গুরুত্বপূর্ণ ধারার সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাই, এসব গুরুত্বপূর্ণ ধারা পড়ে ফেলাটা বা এসব ধারার সব তথ্য মাথায় রাখা খুব বেশি কঠিন কিছু নয়।

তবে এখানে ছোট্ট একটা কিন্তু রয়েছে। প্রশ্ন যেগুলো থেকে এসেছে, এসব বাদেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা রয়েছে যেখান থেকে প্রশ্ন আসা খুবই যুক্তিসঙ্গত। সেসব নিয়ে আরেকটু নিচেই বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তবে, প্রথম ও প্রধান গুরুত্ব থাকবে বিগত সালগুলোতে আসা প্রশ্ন-সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো ভালোভাবে হেফজ করা, ধারা ও বিষয়বস্তুর বর্ণনাসহ।

৩. বিগত সালের প্রশ্নগুলো পড়ার সুপার এডভান্স পদ্ধতি
বিগত সালের প্রশ্নগুলো প্লেইনলি পড়ে গেলে বেশ কিছুটা এগিয়ে যাবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু, আরেকটু এগোতে পারলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, আপনার পাশ করা একেবারেই নিশ্চিত করা সম্ভব।

দণ্ডবিধি কোর্সটি দিয়ে আপনাদেরকে বোঝানো হয়তো সহজ হবে। যেমন, দণ্ডবিধিতে মিথ্যা সাক্ষ্য নিয়ে একটি অধ্যায় আছে। অধ্যায়টির ধারার বিস্তৃতি ১৯১ থেকে ২২৯ পর্যন্ত। এই অধ্যায়ে মিথ্যা সাক্ষ্য সংক্রান্ত সমস্ত কিছুর সংজ্ঞা ও শাস্তির বর্ণনা আছে। এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হওয়া সত্ত্বেও এখান থেকে প্রশ্ন খুব বেশি আসেনি। ১৯৩ ধারা থেকে শাস্তির বিধান থেকে একবার মাত্র এবং ২১১ ধারা দুইবার প্রশ্ন এসেছিলো। কিন্তু, এই অধ্যায়টি থেকে অপরাপর ধারা থেকেও প্রশ্ন আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ ধারা আছে; উপরন্তু উপরে বর্ণিত ১৯৩ ও ২১১ ধারা থেকে যেই দুইভাবে প্রশ্ন এসেছে বিগত সালগুলোতে, সেখান থেকেও ভিন্ন ধরনের আরো কয়েকরকমের প্রশ্ন তৈরি করা সম্ভব। ফলে, সেগুলোও বিবেচনায় নিতে হবে। ১৯১ ধারা ও ১৯২ ধারা উভয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও এখনো কোনো প্রশ্ন আসেনি বিগত সালগুলোতে। দুটোতেই সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে যথাক্রমে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান এবং মিথ্যা সাক্ষ্য উদ্ভাবন করার। ফলে, বিগত সালগুলোতে আসা শুধু ১৯৩ ধারা পড়ে যাওয়াটা বোকামী হবে। এমনকি ১৯৪ ও ১৯৫ ধারা দুইটিও ভালো করে দেখে যাওয়া উচিত। অন্যদিকে, ২০৫ ধারাটিও দেখে যেতে হবে। একারণে, গুরুত্বের তালিকায় আমরা ১৯১ থেকে ১৯৫ এই সব ধারাই উল্লেখ করেছি আমার প্রণীত সাজেশনে। আবার, জনশৃঙ্খলাবিরোধী অপরাধ শিরোনামে আপনারা জানেন, দণ্ডবিধিতে ১৪১ থেকে ১৬০ পর্যন্ত ধারাগুলো থেকে শুধুই ১৪১ ধারা থেকে প্রশ্ন এসেছিলো বিগত সব সাল মিলে! অথচ এই অধ্যায়ে আরো দুইটি অপরাধের উল্লেখসহ বেশ কিছু ধারণা আলোচনা করা আছে। সেগুলো থেকেও প্রশ্ন আসেনি। কিন্তু, প্রশ্ন আসার সমূহ সম্ভাবনা আছে। ফলে সেগুলোকে যত্ন করে পড়তে হবে।

উদাহরণ হিসেবে মিথ্যা সাক্ষ্য সংক্রান্ত অধ্যায় থেকেই সারসংক্ষেপ করে দিই একটা। দেখুন, কী কী পড়বেন। [সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকা সারিগুলো বিগত সালের আসা প্রশ্নের ধারা, হলুদগুলো সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ ধারা।]

অর্থাৎ, আরেকটু এডভান্স প্রস্তুতি নিতে চাইলে এইভাবে বিগত পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের সাথে সম্পর্কিত ধারণা বা টপিকটি থেকে সামগ্রিকভাবে ধারণাটি রাখতে হবে। আবারো ভেঙে বলি, মিথ্যা সাক্ষ্য বিষয়ে বিগত আসা প্রশ্ন সম্পর্কিত ধারা ১৯৩ ও ২১১ বিষয়েতো পড়বেনই এবং সাথে সাথে এই টপিকটির আদ্যোপান্ত আয়ত্বে আনতে চাইলে আর কয়েকটি ধারা বাছাই করে পড়ে গেলেই চলে, এবং এর বাইরে প্রশ্ন আসবে না। আমার ও আমাদের প্রণীত সাজেশন এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সুচিন্তিতভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিশেষে এটাই বলতে চাই যে, আমার বিবেচনায় এভাবে প্রস্তুতি নিতে পারলে নিশ্চিতভাবেই ৮০ ভাগেরও বেশি নাম্বার তোলা কঠিন কোনো বিষয় নয়। সাজেশনগুলো অনলাইনে ইমেজ আকারে খুব শীঘ্রই দিয়ে দেবো আশা করি।

৪. নিজের যুদ্ধ, নিজের রুটিন : ডু অর ডাই
এবারে শেষ কথায় আসি। যাদের কোনো কোচিংয়ে যাবার প্রয়োজন নেই, সেইসব সক্ষম শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো রুটিন বাতলানোর কিছু নেই। তবে, যাদের প্রস্তুতি দুর্বল এবং সময় কম থাকার কারণে এযাবৎ কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেননি, তাদেরকে বলবো যে, আপনারা অবশ্যই এখন প্রতিটি দিন গুণে গুণে হিসেব করে যদি দৈনিক অন্তত ৩/৪ ঘণ্টা সময় দিতে পারেন তাহলেই এগিয়ে যাবেন। রুটিনটি প্রস্তাব করার আগে আরো কিছু বিষয় বলে নিই।

ধরে নিচ্ছি যে, আপনার হাতে সবগুলো মূল বই আছে। মূল বই হাতের কাছে থাকা বাঞ্ছনীয়। যেকোনো কোর্স পড়ার সময় কিছু বেসিক বিষয় বিবেচনায় নেবেন। যেমন, প্রতিটি কোর্সের ধারা বা মূল আইনের সূচিপত্রটি ভালো করে অনুধাবন করা। ২০১৭ সালের পরীক্ষায় অনেকেই ভালো প্রস্তুতি সত্ত্বেও চান্স পাননি তার অন্যতম প্রধান কারণ প্রতিটি আইনের সূচিপত্র সম্পর্কে, তথা কোন ধারাসমূহে কোন কোন বিষয়বস্তু বর্ণিত আছে সে সম্পর্কে বেসিক আইডিয়া ছিলো না। আবার, সূচিপত্র দেখে দেখে আইনটিতে বর্ণিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালোভাবে আইডিয়াগুলো হজম করতে চাইলে সবার আগেই এটি করা উচিত। ভেতরটা দেখার আগে বা পোশাকটা খোলার আগে পোশাকটির গঠনবৈশিষ্ট্য দেখে নিয়ে খুলতে হবে, দেখতে হবে যে বোতাম বা চেইনটি কোথায়, অহেতুক টানাটানি করলে চলবে না।

ফলে প্রথম কাজই হবে সূচিপত্র থেকে প্রতিটি অধ্যায় শিরোনাম ও ধারার শিরোনাম দেখে মনের কল্পনায় বিষয়টির সামাজিক বাস্তবতা ও তার সাথে উক্ত আইনটির সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আগের সালের প্রশ্নগুলোর ধারা বইয়ে দাগিয়ে নিতে পারেন একটি নির্দিষ্ট কালির মার্কার কলম দিয়ে। আর যেগুলো, সাজেশন আকারে সম্পর্কিত ধারা সেগুলোও আরেকটি কালি দিয়ে দাগিয়ে নেওয়া।

তৃতীয়ত, আগের সালের প্রশ্নগুলোর খুঁটিনাটি বোঝার চেষ্টা করবেন। উক্ত একই ধারা থেকে আরো কি কি প্রশ্ন ভিন্নতরভাবে তৈরি হতে পারে সেদিকেও মনোযোগ দিতে হবে। আর সম্পর্কিত ধারাগুলো প্রথম দফায় না হোক, অন্তত দ্বিতীয়বার যখন পড়বেন তখন সেগুলোকে গুরুত্ব দেবার চেষ্টা করবেন।

চতুর্থত, কোনো পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট শুরুতেই দেবেন না। যখন যে বিষয় পড়বেন তখন সে বিষয়ে ছোট ছোট মডেল টেস্টে অংশ নেবেন নিজেকে যাচাই করার জন্য।

পঞ্চমত, সবগুলো কোর্স পড়া শেষ করে পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট বইয়ে হাত দেবেন। সম্প্রতি দেখলাম, ১০ হাজার এমসিকিউ প্রশ্ন সম্বলিত বইও বাজারে এসেছে! একেবারে ফালতু আইডিয়া। কেননা, বহুদিনের গবেষণা থেকে বলছি যে, একেবারে পূর্ণাঙ্গ সাজেশন আকারে গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্ন তৈরি করলেও মৌলিক প্রশ্নের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩ হাজারের বেশি হওয়া সম্ভব নয়। প্রশ্নগুলোকে আরো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করলেও সর্বোচ্চ ৫ হাজার মৌলিক প্রশ্ন হতে পারে। তাহলে, হাজার হাজার প্রশ্ন ডিল না করে আপনাদের কাছে পরামর্শ হলো বাজারের প্রতিষ্ঠিত ও আস্থাভাজন লেখকদের মডেল টেস্ট বইগুলোর মধ্য থেকে গোটা ৫০টি পূর্ণাঙ্গ মডেল টেস্ট নিজেকে যাচাই করার জন্য দিতে পারেন। তবে, আবারো বলছি যে, সেটি শেষের দিকে দেবেন। শুরুর দিকে নয়। মডেল টেস্টগুলোতে না পারা প্রশ্ন নিয়ে অন্য একটি লেখায় আরো কিছু কথা ছিলো। তার সারসংক্ষেপ ছিলো এটাই যে, একটি না-পারা প্রশ্ন নিয়ে সংশ্লিষ্ট ধারা দেখে সব তথ্য মনে রাখার চেষ্টা করবেন।

এবার আসি রুটিন প্রসঙ্গে। একটি খসড়া রুটিন করে দিলাম নিচে। বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় কত নম্বরের প্রশ্ন করা হয় এবং কোন কোর্স কতটা গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে সেসব বিবেচনায় নিয়েই টপিকগুলো সাজিয়েছি। আগে ছোট কোর্সগুলো দিয়ে রেখেছি। নিচের রুটিনটিতে দেখুন ছোট কোর্সগুলো শেষ করার জন্য ১৫ দিন সময় লাগছে সাকুল্যে। অন্যদিকে, দণ্ডবিধিতে ১৫ দিন [অতিরিক্ত ৪দিন ধরে], ফৌজদারি কার্যবিধিতে ১৫ দিন [অতিরিক্ত ৪দিন ধরে] এবং দেওয়ানি কার্যবিধিতে ২০ দিন [অতিরিক্ত ৪দিন ধরে]। সবমিলিয়ে সব কোর্সগুলোকে মূল ধারা বুঝে বুঝে একটা বেসিক বোঝাবুঝি দাঁড় করাতে লাগছে ৬৫ দিন। 

বস্তুত এই রুটিনটি তৈরি করা হয়েছিলো সেপ্টম্বরের শুরুতে। এই লেখাটি আপনি যখন পড়ছেন তখন নভেম্বরের শেষ সপ্তাহের পরীক্ষার হিসেব অনুযায়ী সময় আরো কম আছে। সে অনুযায়ী আপনারা এডজাস্ট বা সমন্বয় করে নেবেন, কেননা রুটিনটি আগের রূপেই রেখে দিয়েছি। নিচে রুটিন এর ছকগুলো পরপর দিয়ে রাখলাম।

প্রথমেই ছোট সাবজেক্ট বা কোর্স গুলোর একসাথে একটি ছক।

এবার দণ্ডবিধি পড়ার রুটিন। যাদের আগের প্রস্তুতি আছে, তাদের এতো সময়ও লাগবে না। দেখুন।

এবারে ফৌজদারি কার্যবিধির পড়ার রুটিন। 

এবারে দেওয়ানি কার্যবিধি পড়ার রুটিন।

মডেল টেস্টগুলো দেবার জন্য আমি সবসময় একটি পরামর্শ দিয়ে এসেছি। অন্য একটি লেখায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বলেছিলাম। এখন সেই লেখা পড়ার পরামর্শ দেবো না; বরং এখানেই সেই লেখার একটি সারসংক্ষেপ জানিয়ে রাখি।

আমার লেখা বই হোক আর অন্য কোনো লেখকের বই হোক, মডেল টেস্ট দিতে শুরু করলে যে যে প্রশ্ন আপনি ভুল করবেন, সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো পড়তে থাকবেন। দেখবেন, আপনার কনফিডেন্স বাড়তে থাকবে, এবং প্রথমবার পড়ার সময় এড়িয়ে যাওয়া বা কম গুরুত্ব দিয়ে পড়াগুলোর গুরুত্বও বুঝতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবেন। বাজারের কোনো মডেল টেস্ট বইয়েই সাধারণভাবে মডেল প্রশ্নগুলোর উত্তরের রেফারেন্স থাকে না বা উত্তর সংক্রান্ত ধারাগুলোর উল্লেখ থাকেনা। ফলে, না পারা প্রশ্নগুলোর কোনো হদিস পাওয়া কঠিন হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের জন্য। আমি নিজেও একটি মডেল টেস্ট বইয়ের লেখক হিসেবে অন্তত এই দায়টুকু মিটিয়েছি। সঠিক উত্তরের সাথে সবসময় রেফারেন্স দিয়েছি।

এই হলো – ডু অর ডাই! এই ডু মানে রিড! মানে পড়া। পড়া পড়া আর পড়া। আর এই ডাই মানে পতন। চলতি বাংলায় পস্তানো। পড়বেন নাকি পস্তাবেন? ডু অর ডাই যুদ্ধে এটুকুই বেসিক পরামর্শ।

আজ এটুকুই। সকল শিক্ষার্থী-পরীক্ষার্থীর জন্য শুভকামনা আমার পক্ষ থেকে। শীঘ্রই আসছি সব সাবজেক্টের সাজেশন নিয়ে।

লেখক : আইনজীবী ও ‘আইনের ধারাপাত – MCQ মডেল টেস্ট বুক’ এর রচয়িতা এবং ফাউন্ডার – juicylaw.com

সর্বাধিক পঠিত