• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার পাঁচ মাস পর পুলিশের হাতে ধরা পড়লো রিমন

প্রকাশ:  ২৪ জুন ২০১৯, ০৮:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 সহপাঠীর সাথে তিন বছর প্রেম করে বিয়ে। তারপর মাসাধিককাল বাসা ভাড়া নিয়ে একত্রে বসবাসের পর হঠাৎ নিরুদ্দেশ। এরপর ছেলে নিখোঁজের কথা উল্লেখ করে গত ২৩ জানুয়ারি থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর ছেলেকে অপহরণের অভিযোগে মায়ের মামলা। গত ২০ মার্চ থানায় মায়ের দায়ের করা এফআইআর হওয়া মামলার আসামী হচ্ছেন ছেলে রিমনের স্ত্রী চায়না আক্তার ও তার মা রোশনারা বেগম। সাথে আরো আসামী করা হয় বিয়ের কাবিননামায় সাক্ষী জাকির হোসেন এবং দুই পক্ষ নিয়ে মীমাংসার চেষ্টাকারী এএম টুটুল পাটওয়ারী নামে একজন ব্যবসায়ী। এরই মধ্যে স্বামীকে হারিয়ে হতাশ স্ত্রী সহপাঠী চায়না আক্তার গত ১৩ জুন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিরুদ্দেশ স্বামীর সন্ধান চান। তার ৫ দিন পর ১৯ জুন পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে রিমনের মা রওশনারা বেগম অপহরণ মামলার আসামী আটক ও তাদের ছেলেকে উদ্ধারের বিষয়ে পুলিশের গড়িমসির অভিযোগ করে।  
কিন্তু এতসব কিছু ঘটনার মধ্য দিয়েও অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন্ত মুজমদার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পুলিশের জালে নিয়ে আসতে সক্ষম হন সেই কথিত অপহৃত রিমনকে। অবশেষে শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকার দোহার উপজেলার জয়পাড়া বাজারের একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে দোহার থানা পুলিশের সহায়তায় রিমন উদ্ধার হয়।
গতকাল রোববার রাতে প্রেসব্রিফিং করে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুর রকিব ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান। তিনি জানান, স্বেচ্ছা আত্মগোপন করা রিফাতুল ইসলাম রিমন গতকাল রোববার দুপুরে চাঁদপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪  ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের মাধ্যমে এই দীর্ঘ ৫ মাসের নাটকের অবসান ঘটায়।
ওসি জানান, জবানবন্দিতে রিমন জানায়, তার পিতার পরামর্শে প্রথমে সে সিলেটের সুনামগঞ্জে পরবর্তীতে ঢাকার দয়াগঞ্জে ও নাজিরা বাজারে পর্যায়ক্রমে অবস্থান করে। সর্বশেষ গত ২০ দিন পূর্বে রিমনের বাবা ফারুকুল ইসলাম রিমনকে ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার জয়পাড়া বাজারের জনৈক নূরুল ইসলামের মোবাইল ফোনের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে রেখে আসেন।
সর্বশেষ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুমন্ত মজুমদার তাকে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জালে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। কিন্তু চতুর রিমন বারংবার তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার চেষ্টা করলেও তাকে উদ্ধার করতে সেখানে হাজির হন তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ। গত ২১ জুন দোহার থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ নূর খানের সহায়তায়  দিনভর জয়পাড়া বাজারে চিরুনী অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা যখন প্রায় ব্যর্থ, তখন ফিরে আসার প্রক্রিয়াকালে সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে কুরিয়ার সার্ভিসের লোক হিসেবে ছদ্মবেশে রিমনের নাম্বারে ফোন দিলে টোপ গিলে সে। কিছুক্ষণ পর তার দোকান মালিককে দিয়েই সে ফোন দিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের বিষয় জানতে চায়। এ সময় পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়। পরে দোহার থানা পুলিশের সহযোগিতায় শুক্রবার গভীর রাতে তাকে ধরতে সমর্থ হয়। প্রেসব্রিফিংকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন্ত মজুমদারসহ প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুন্নবী নোমান, সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

সর্বাধিক পঠিত