মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
ফরিদগঞ্জ উপজেলার আলোনিয়া গ্রামে বিদেশে যাওয়ার জন্যে টাকা না দেয়ায় মা আলিমের নেছা (৬০)কে ধারালো দা দিয়ে গলা কেটে হত্যার অপরাধে ছেলে মোঃ সফিকুর রহমান (২৫)কে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা অর্থদ- দিয়েছে আদালত। গতকাল ২৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টায় চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মোঃ জুলফিকার আলী খাঁন এ রায় দেন। হত্যার শিকার আলিমের নেছা ওই গ্রামের মোঃ সাহাজ উদ্দিনের স্ত্রী এবং যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত মোঃ সফিকুর রহমান তার ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টার দিকে বিদেশ যাওয়ার জন্যে টাকা না দেয়ায় ছেলে সফিকুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে তার মাকে দা দিয়ে গলার মধ্যে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। কিছুক্ষণ পরে ওই কক্ষ থেকে শব্দ হলে সাহাজ উদ্দিন ওই কক্ষে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তার স্ত্রীকে দেখতে পান। তিনি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই আলিমের নেছার মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে লাশ ময়না তদন্তের জন্যে চাঁদপুর মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় ওইদিনই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে সাহাজ উদ্দিন ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করে সন্দেহজনকভাবে নিহতের ছেলে সফিকুর রহমানকে আটক করে। পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালতের কাছে মাকে সে নিজেই হত্যা করেছে মর্মে জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন ফরিদগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির সফিকুর রহমানকে একমাত্র আসামী দেখিয়ে একই বছর ৩ নভেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোঃ আমান উল্যাহ বলেন, মামলাটি গত ৩ বছর চলাকালীন সময়ে ১১ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামীর উপস্থিতিতে উল্লেখিত রায় দেন।
সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহমেদ অভি এবং আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডঃ মোঃ কামরুল ইসলাম।