‘টক অব দ্য গাজীপুর’ মেয়র জাহাঙ্গীর
গাজীপুরে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রতিটি অফিস, বাস, ট্রেন ও বাসাবাড়িতেও এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কারের পর থেকে এ আলোচনা শুরু হয়েছে নগরজুড়ে। বিশেষ করে রোববার (২১ নভেম্বর) রাতে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে—ফেসবুকে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে আলোচনায় নতুন হাওয়া লাগে।
ঢাকা থেকে গাজীপুর আসা ট্রেনযাত্রী আব্দুল হাই বলেন, কমলাপুর থেকে গাজীপুর আসার পথে ট্রেনজুড়ে মেয়র জাহাঙ্গীরকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কেউ মেয়রের পক্ষে আবার কেউ কেউ বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনায় সরব ছিলেন।
নগরীর বিভিন্ন চায়ের দোকানেও এখন আলোচনার বিষয়বস্তু মেয়র জাহাঙ্গীর। অনেকে মেয়রের উন্নয়নমূলক কাজের প্রশংসা করেছেন। আবার রাস্তা ও ড্রেন করতে গিয়ে রাস্তার পাশে যাদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের অনেকে মুখর ছিলেন মেয়রের সমালোচনায়। এছাড়া যেসব এলাকার উন্নয়ন এখনও শুরু হয়নি বা অসমাপ্ত রয়েছে সেসব এলাকার লোকজনও ছেড়ে কথা বলছেন না মেয়রকে।
ভোগড়া এলাকার মনির হোসেন বলেন, রাস্তায় আমাদের ১০টি দোকান ভাঙা পড়েছে। জমি চলে গেছে অন্তত ৫০ লাখ টাকার। সে তুলনায় আমরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছি যৎসামান্য, যা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধেক দোকানঘরও মেরামত করতে পারিনি।
শেষ পর্যন্ত মেয়র জাহাঙ্গীরের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে তা নির্ভর করছে দলীয়প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর। তবে মহানগরীর উন্নয়নের স্বার্থ অব্যাহত রাখতে মেয়র জাহাঙ্গীরের এ বিপর্যয় কেটে যাবে বলেও মনে করছেন অনেকে।
গাজীপুর আদালতের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ দুটি ভিন্ন বিষয়। যদিও জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন সেহেতু আওয়ামী লীগের পদ থেকে বহিষ্কৃত হলে মেয়র পদে কী হবে তা স্থানীয় সরকার আইনে কিছু বলা নেই। তবে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হলে এবং তিনি কারাগারে গেলে সরকার তার স্থলে বিকল্প কাউকে দায়িত্ব দিতে পারে। বর্তমানে মেয়র হিসেবে জাহাঙ্গীর আলমের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে কোনো বাধা থাকার কথা নয়। তবে বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে।’
নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নগরীর উন্নয়নের স্বার্থে মেয়রের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া উচিত। উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হলে নগরবাসী যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তেমনি দল হিসেবে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’