• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিল দিতে গিয়ে ২২ বছর পর ধরা ফাঁসির আসামি

প্রকাশ:  ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী আরেফ আহমেদকে ১৯৯৯ সালে হত্যার পর রাজশাহীতে চলে যান অন্যতম খুনি রওশন ওরফে আলী ওরফে উদয় মণ্ডল। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে নিজের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে শুরু করেন নতুন জীবন। চেহারায় ভিন্নতা আনতে ফেলে দেন মুখের দাড়ি। প্রথম দিকে রাজশাহীতে নিজেকে আলী নামে পরিচয় দিলেও মেহেরপুরের গাংনীর বাসিন্দা রওশন পরে উদয় মণ্ডল নামে গাজীপুরের ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। দীর্ঘ সময় রাজশাহীতে থেকে সেখানেই গড়ে তোলেন গরুর খামার।

রওশন ছিলেন একজন সিরিয়াল কিলার ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এমনকি তিনি দেশে ছিলেন কি-না, সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি একটি হত্যা মামলার তদন্তে তিনি রাজশাহী এলাকায় আছেন, এমন তথ্য পাওয়া যায়। তদন্তের এক পর্যায়ে তার মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়। মোবাইল নম্বরটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিলো না। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য নম্বরটি সচল করেন রওশন। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের সূত্র ধরেই তার বাসার নম্বর খুঁজে পায় র‌্যাব

অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুনি রওশনকে গ্রেফতারে দীর্ঘদিন ধরে অভিযান চালিয়েও তার কোনো হদিস পাচ্ছিল না। পরে একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ওই মোবাইল নম্বরটি দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন রওশন। নম্বরটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও এক সময় সচল করেন তিনি। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের এ তথ্যের সূত্র ধরেই তার বাসার নম্বর খুঁজে পায় র‌্যাব। সম্প্রতি অভিযানে রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার ভারালীপাড়া এলাকা থেকে রওশনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

র‌্যাব জানায়, জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী আরেফ হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক মামলার আসামি রওশন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এ আসামি ছিলেন একজন ‘সিরিয়াল কিলার’। কাজী আরেফ ছাড়াও স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং আরও ছয়-সাতজনের হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া ও পরিকল্পনার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি সভা চলাকালে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত গুলিতে নিহত হন কাজী আরেফসহ পাঁচজন। ওই ঘটনায় দৌলতপুর থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় ২৯ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট কুষ্টিয়া জেলা দায়রা জজ আদালত ১০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

সর্বাধিক পঠিত