মুন্সীগঞ্জে সেতু ভেঙ্গে নদীতে, ২৫ গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পোড়াগঙ্গা নদীতে বালু বোঝাই একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় সেতুর পিলার ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে এলাকার শিক্ষার্থীসহ ২৫টি গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের আদাবাড়ি ধামালিয়া বাজার সংলগ্ন ২০০ ফুট সেতুটি বাল্কহেডের (বলগেট) ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর সিরাজদিখান ও লৌহজং উপজেলার ধামালিয়া, নয়াবাড়ি, ধাইরপাড়া, কড়ারবাগ, মিঠুসার, ইসলামবাগ, কালপাড়া, হুগলী, রসকাঠী, ফুলকুচিসহ ২৫ গ্রামের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

ধামালিয়া গ্রামের সোহরাব বেপারী জানান, এক মাস আগে বলগেটের ধাক্কা লেগে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমরা বলগেট মালিকদের এ পথে চলাচলের জন্য নিষেধ করলেও জৈনসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দুদু চেয়ারম্যানের বালু বহনকারী বলগেট কোন পাত্তা না দিয়ে চালালে তার বলগেটের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে ।

বিদ্যালয়ে শিক্ষাথীর উপস্থিতি নেই বললেই চলে বলে জানান, ধামালিয়া-২ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. অলিউল্লাহ। মাদ্রাসা ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও একই অবস্থা। আশেপাশে অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এপাড়-ওপাড় যাতায়াত করতে পারছেনা। বন্দী জীবন যাপন করছে এলাকাবাসী ।

মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান করিম শেখ জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে ‘বাহাদুর কাদির-১’ নামের একটি বাল্কহেড উপজেলার জৈনসারে বালু নামিয়ে দিয়ে সুবচনীর দিকে যাচ্ছিল। পথে সেতুটির একটি পিলারে জোরে ধাক্কা দেয়। এতে সেতুটির মাঝের প্রায় একশ ফুট সিমেন্টের অংশ ভেঙ্গে বাল্কহেডটির উপর পড়লে সেটি অর্ধেক ডুবে যায়। এলাকাবাসী গিয়ে বাল্কহেডটি আটক করলেও এর সারেং পালিয়ে গেছে। খুব শিগ্রই বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে। ঢাকা থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার এসেছিল। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে ।

সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানবীর মোহাম্মদ আজিম জানান, দুর্ঘটনার পর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় মধ্যপাড়া ইউনিয়নের ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, এক মাস আগেও আরেকটি বাল্কহেডের ধাক্কায় সেতুটি হেলে যায়। সে সময় থেকে এ সেতু দিয়ে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে শুধু পথাচারী চলাচল করতে বলা হয়। সেতুটি আবার দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) অবহিত করা হয়েছে।

এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনগণের চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের এবং বাল্কহেডের মালিক পক্ষকেও আইনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।