নওগাঁয় নির্যাতন থেকে পালিয়ে ধর্ষণের শিকার কিশোরী
নওগাঁর সদর উপজেলায় ১২ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আহতাবস্থায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে গাইনি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই ধর্ষককে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে এ পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ধর্ষিতা নওগাঁ সদরের ভবানীপুর গ্রামের আলমের মেয়ে।
আটককৃত হলেন, নওগাঁ সদর উপজেলার বুলবুল হোসেন (২৮) এবং হাপানিয়া গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেন (৫০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার মহাদেবপুর উপজেলা সদরের মাসুদ রানার বাড়ীতে গত সাত মাস আগ থেকে ওই কিশোরী সেখানে থাকত। দম্পত্তি মাসুদ রানা ও স্ত্রী শিল্পী নি:সন্তান হওয়ায় তাদের বাড়ীতে মেয়ের মতো থেকে মহাদেবপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়াশুনা ও বাড়ির কাজ কর্ম করতো। ওই কিশোরীর তিন ভাইবোন। সে পরিবারের সবার বড় সন্তান। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে মাসুদ রানার বাড়িতে রেখে তার বাবা আলম ও মা ঢাকায় থাকত। মাসুদ রানার বাড়িতে ওই মেয়েটি থাকলেও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়া হতো না।
গত কুরবানি ঈদে তার বাবা দেখা করতে গেলে তাকে লুকিয়ে রাখে মাসুদের স্ত্রী শিল্পী। এছাড়া কিশোরীর উপর বিভিন্ন ভাবে শারিরীক নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে। তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত ৬ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে ওই কিশোরী। উপজেলার পোষ্ট অফিস মোড়ে অপেক্ষা করছিল তার ফুফুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামে যাওয়ার জন্য।
কিশোরীর অস্থিরতা দেখে অপরিচিতি দুইজন লোক তাকে ফুফুর বাড়িতে পৌছে দেয়ার কথা বলে একটি সিএনজিতে উঠানোর পর চকলেট খাওয়ায়। এতে কিশোরী সিএনজির মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ওইদিন রাত ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া মোহনপুর বিলে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল। জ্ঞান ফেরার পরে সে একটি বাড়িতে উঠে। তার কথা শুনে বাড়িওয়ালা চৌকিদারের মাধ্যমে নওগাঁ সদর থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে। গত ৭ অক্টোবর দুপুরে নওগাঁ সদর হাসপাতালে গাইনি বিভাগে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্টে প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।
কিশোরীর বাবা আলম বলেন, আমার মেয়ের উপর যারা এ পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। সেই সাথে দম্পত্তি মাসুদ রানা ও তার স্ত্রী শিল্পীর শাস্তির দাবী করেন তিনি।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় কিশোরীর বাবা আলম বাদী হয়ে রোববার থানায় মামলা করেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।