• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

‘ঠিকাদার কাম না কইরা ভাইগা গিয়া আমাগো সড়কের বারটা বাজাইছে’

প্রকাশ:  ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:১২
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রিন্ট

সড়ক আগেই ভালা আছিল, কাজ করনের লিগা সড়কটি কাটল, ঠিকাদার কাম না কইরা ভাইগা গিয়া আমাগো সড়কের বারটা বাজাইছে। বৃষ্টি নামলেই ১০/১২ দিন পায়ে হাটন যায় না। এভাবেই ক্ষোভের সংগে কথা গুলি বলছিলেন মুন্সিচড় গ্রামের জসিম উদ্দিন।

বালিয়াটী- আতুল্লা কাচা  সড়কের ইট সেলিং করার জন্য ঠিকাদার মাটি কেটে প্রস্তুত করে কাজ না করেই চলে গেছে। ফলে এ  সড়কে প্রায় ২ মাস ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদ ঘেষে বালিয়াটী- আতুল্লা সড়ক। এ সড়কের আংশিক সড়ক পাকা করা হয়েছে এ বছর। বাকী সড়কটি ইট সেলিং করার জন্য এ বছর বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করার জন্য এ সড়কটি কেটে ইট বসানোর জন্য প্রস্তুত করেন। পরে বালিয়াটী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সড়কটি ইট সলিং করে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে তাদের লোকসান হবে এমন অভিযোগ এনে কাজ না করেই চলে যাওয়ায় মারাত্বক সমস্যায় পড়েছেন প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ।

বালিয়াটী - আতুল্লা সড়কের মুন্সিচড় মোড় থেকে জগা মার্কেট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক প্রায় ৪ মাস ধরে কেটে রাখায় সামান্য বৃষ্টি হলে পায়ে হেটে যাওয়ার পরিবেশ থাকে না। চলতি বছর অতি বৃষ্টিতে কাচা সড়কটি একাধিক স্থানে প্রায় ২ মাস ধরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার পথচারীদের মারাত্বক সমস্যা হচ্ছে।

এ সড়ক দিয়ে সাটুরিয়া উপজেলা ছাড়াও পার্শবর্তী ধামরাই উপজেলা, টাঙ্গাইলের নাগরপুর, মির্জাপুর উপজেলার প্রায় ১০ টি গ্রামের মানুষ চলাচল করে এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু এ সড়ক দিয়ে রিক্সা, অটো রিক্সা চলাচলও বন্ধ রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হচ্ছে। কৃষক তার কাচা পণ্য হাট বাজারে নিতে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে।

এ ব্যপারে নিকলা জে এ হক উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, আমি সাটুরিয়া থেকে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাই, আমার মটর সাইকেল থাকার পরও সড়কটি এতই খারাপ হয়ে আছে যে, আমার বাইসাইকেল চালিয়ে আসতে হয়।

মুন্সিচড় গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, এ সড়ক দিয়ে ২ টি প্রাথমিক, ২ টি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদ্রাসা এবং একটি কলেজের প্রায় ৫ শতাধিক ছাত্র ছাত্রীর চলাচল করতে হয়। এ সড়কটি চলাচলের অযোগ্য থাকায় তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে।

বালিয়াটী ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সানি, মুস্তাফিজুর রহমান জানান, এ সড়কের ৬ টি স্থানে এমন কর্দমাক্ত হয়ে আছে যে, আমরা হেটেই আসতে পারি না। তাছাড়া পাশের বাড়ীর মানুষ বাড়ীর উপর দিয়ে হাটতে না দেওয়ায় আমাদের চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

মনহারপুর গ্রামের ব্যাবসায়ী বিল্লাল হোসেন ও জহিরুল ইসলাম ইসলাম জানান, আমাদের সাটুরিয়া বাজার থেকে পণ্য এনে বিক্রি করতে হয়। কিন্তু বালিয়াটী- মুন্সিচড় সড়কটি ইট সলিং কাজ শুরু করার পর ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে যাওয়ায় সড়কটি চলাচলের অযাগ্য হয়ে পড়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। একশত টাকার ভাড়া আমাদের ৩শত টাকা দিয়েও আনতে পারছি না। ফলে আমরা ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষীন হচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. বসির উদ্দিন ঠান্ডু জানান, ঠিকাদার কাজ না করে চলে যাওয়ায় বিষয়টি আমি শুনেছি।  চলতি মাসের মানিকগঞ্জ জেলা সমন্নয় সভায় এ বিষয়টি আমি লিখিত তুলে ধরব।

এ ব্যপারে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক জানান, বালিয়াটী-আতুল্লা সড়কের ইট সলিং কাজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কিছুটা করে বাকী কাজ না করেই চলে গেছে। যথন প্রতিষ্ঠান কাজটি পায় তখন ইটের দাম কম ছিল। কাজের সময় ইটের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ কাজে লোকসান হবে ভেবে তারা চলে যায়। যাতে বাকী কাজ সম্পন্ন করে তার জন্য আমরা তাদের লিখিত ভাবে চিঠি দিব বলেও জানান ওই সহকারী প্রকৌশলী।

সর্বাধিক পঠিত