বন্যায় বিধ্বস্ত রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ
নওগাঁর আত্রাইয়ে এবারের বন্যায় বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট এখন পর্যন্ত সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ জনগণ এসব রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। যান চলাচল ও পায়ে হেঁটে চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এসব রাস্তাঘাট এখন এলাকাবসীর জন্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বন্যায় বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, এবার আত্রাই উপজেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল এবং ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার ৮ইউনিয়নে ফসল ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ রাস্তাগুলো বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ায় বন্যার পানি নামার সাথে সাথে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার সকল স্তরের মানুষ।
এসব রাস্তাঘাট দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। জনগণের অভিযোগ এগুলো রাস্তা ঘাট সংস্কারে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো উদ্যোগ। এদিকে বন্যায় বিধ্বস্ত সড়ক যোগাযোগের কারণে কৃষক তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলোর মধ্যে রয়েছে- উপজেলার সাহেবগঞ্জ হতে মধুগুড়নই হয়ে পাঁচুপুরের পাকা রাস্তা দুই জায়গা, পাঁচুপুর কালিবাড়ির রাস্তা, জাতআমরুল রাস্তা, আত্রাই টু কালিগঞ্জ রাস্তার কাশিয়াবাড়ি সুইচগেট সংলগ্ন স্থান, হাটকালুপাড়া গ্রামের রাস্তা, চকশিমুলিয়া, আত্রাই হতে কাশিয়াবাড়ি রাস্তার ভরতেঁতুলিয়া পোষ্ট অফিস সংলগ্ন রাস্তা, তারানগর, বাউল্লাপাড়া, বড় কালিকাপুর ও ক্ষিদ্রকালিকাপুর, বিষা ও ক্ষুদ্র বিষা।
এ সড়কগুলো সংস্কার না করায় আত্রাই উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সড়কগুলোর সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলার সকল স্তরের জনগন। ফলে দিনের পর দিন জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে পাঁচুপুরের পাকা বিধ্বস্ত রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় আধা কিলোমিটারের রাস্তা প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে।
উপজেলার শিকারপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান বলেন, আত্রাই সিংড়া সড়ক দীর্ঘদিন থেকে বেহাল দশা হয়ে রয়েছে। বন্যার ফলে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মালিপুকুর, গুরনই, চকবিষ্টপুর, জগদাস, শিকারপুর, ডুবাই, বৈঠাখালীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের লোকজন এই একটি মাত্র রাস্তার উপর নির্ভরশীল।
মধুগুড়নই গ্রামের আলহাজ শেখ আব্দুল জলিল বলেন, পাঁচুপুর কালিবাড়ি রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার লোকজনদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা সদরের সাথে আমাদের গ্রামের রাস্তাটি বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে থাকলেও এখনও পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। রাস্তাটি বিধ্বস্ত হওয়ায় কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিতে এখন চরম বিপাকে পড়তে হয়। বিশেষ করে জরুরি চিকিৎসাসেবা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষের নেই কোনো মাথা ব্যাথা।
কালিবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী গোবিন্দ বলেন, আমাদের ব্যবসার মালামাল পরিবহনে আমরা চরম সমস্যায় রয়েছি। সেই পাকা রাস্তা থেকে মাথায় করে মালামাল দোকান পর্যন্ত বহন করতে হয়ে।
এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেন, এবারে আত্রাইয়ে স্মরণকালের বন্যায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়েছি। সেই সাথে সংস্কারের বরাদ্দ চাহিদাও দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। আশাকরি খুব দ্রুত আমরা বরাদ্দ পাবো এবং এসব রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু করতে পারবো।
এসএম