• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাড়ল ১১৪ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ

প্রকাশ:  ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদেশি বিনিয়োগে ১১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময়ে দেশে নিট ৮৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা আগের ৩ মাসের চেয়ে ৭৬ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। এছাড়াও এই প্রবৃদ্ধি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিনিয়োগ হিসেবে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে মোট তহবিল এসেছে ১৫৭ কোটি ৬১ লাখ ডলার। অন্যদিকে ৭১ কোটি ১৫ লাখ ডলার মুনাফা, আন্তঃকোম্পানি ঋণ পরিশোধসহ নানা উপায়ে বাইরে গেছে। এই হিসাবে ৮৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার নিট বিনিয়োগ এসেছে।

এর আগে গত বছর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে ৪০ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের নিট বিনিয়োগ এসেছিল। আর আগের প্রান্তিকে গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এসেছিল ৪৯ কোটি ডলার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি বিনিয়োগ গতিশীল করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে জমিসহ বিভিন্ন সেবা নেয়া সহজ করা হয়েছে। এসব কারণে বিনিয়োগ বাড়তে পারে। তবে আওয়ামী সরকারের পতনের পর নানা ক্ষেত্রে যদি অনিশ্চয়তা না থাকত, তবে বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পেত বলেও মনে করেন তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশি ঋণ কিছুটা বেড়েছে। সবমিলিয়ে সরকারি-বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ কিছুটা বেড়ে মার্চ শেষে ১০৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৭৬ কোটি ডলারে উঠেছে। প্রতি ডলার ১২২ টাকা দরে দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা।

গত ডিসেম্বর শেষে বিদেশি ঋণ ছিল ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ডলার। তারও আগে গত বছরের জুন শেষে এই ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৩৪১ কোটি ডলার।

এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল। বিগত সরকারের সময়ে নেয়া ঋণের বড় অংশই ছিল উচ্চ সুদের বাণিজ্যিক ঋণ। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাণিজ্যিক ঋণ কমিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বেশি ঋণ নিচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাকের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি ঋণের মধ্যে গত মার্চ পর্যন্ত সরকারি খাতে রয়েছে ৮ হাজার ৪৮৯ কোটি ডলার। গত ডিসেম্বর শেষে এর পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৪৩১ কোটি ডলার। আর গত বছরের জুনে সরকারি খাতে ৮ হাজার ২৮১ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ ছিল।

অন্যদিকে গত মার্চ শেষে বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৮৭ কোটি ডলারে। গত ডিসেম্বরে এই ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৪২ কোটি ডলার। আর গত বছরের জুন শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি ছিল ২০ হাজার ৬০ কোটি ডলার।

গত জুনের শেষ সপ্তাহে আইএমএফের ঋণের দুই কিস্তির ১৩৪ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। পরবর্তীতে কম সুদে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবিসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকেও ঋণ এসেছে। যার পরিমাণ ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। অন্যদিকে রেমিট্যান্সে সুবাতাসের ফলে সবমিলিয়ে দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে গত জুন শেষে ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। আর আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুসারে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারে। যা সবশেষ ২৮ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের সময় দেশে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সবশেষ চলতি সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ২০২ কোটি ডলার পরিশোধের পর গ্রস রিজার্ভ নেমেছে ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে। বিপিএম৬ অনুযায়ী যার পরিমাণ ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার।