• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দারুণ জয়ে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ

প্রকাশ:  ০৫ আগস্ট ২০১৮, ১১:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২ রানে হারিয়ে ১-১ এ সমতায় ফিরল বাংলাদেশ। এ দিন প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭১ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৯ রান তুলতে পারে ক্যারিবিয়রা।

মার্চে শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল থেকে টানা ৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হারের পর জয়ের মুখ দেখল বাংলাদেশ।

ম্যাচের শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। এ সময় অপুর হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন সাকিব। যেখানে আগের করা ৩ ওভারে ১ উইকেট নিয়ে রান দিয়েছিলেন ২৬, শেষ ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে ২টি উইকেট তুলে নিয়ে অধিনায়কের ভারসার প্রতিদান দিলেন ২৭ বছর বয়সী এ স্পিনার। ফলে বাংলাদেশ জয় পায় ১২ রানে।

ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে প্রথম ৩টি ডেলিভারি ওয়াইড দিয়ে বসেন কাটার মাস্টার। তবে দ্বিতীয় বলেই এভিন লুইসকে (১) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে তুলে নেন প্রথম উইকেট। তার পর পরবর্তী ওভারে বল করতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এসে আন্দ্রে রাসেলকেও (১৭) ফেরান মোস্তাফিজ। আর নিজের করা প্রথম ওভারেই দুর্র্ধষ মারলন স্যামুয়েলসকে (১০) ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ে চাপ সৃষ্টি করেছেন সাকিব। এর পরের আঘাত রুবেলের। অষ্টম ওভারের প্রথম বলেই দিনেশ রামদিনকে (৫) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান তিনি।

এর পর আন্দ্রে ফ্লেচার ও রভম্যান পাওয়েল টাইগারদের হতাশা বাড়িয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন। এ জুটিতে ৪৩ বলে ৫৮ রান করে। এই জুটির দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের জয়ের আশা যখন ক্রমশ ম্লান হয়ে যাচ্ছিল তখনই আঘাত হানেন অপু। ম্যাচের ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফ্লেচারকে আউট করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান এই স্পিনার। তবে এর আগেই ৩৮ বলে ৪৩ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলে ফেলেন এই ওপেনার। এরপর ক্যারিবীয় অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথহোয়াইটকে (১১) ফিরিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি বাংলাদেশের দিকে নিয়ে নেন সাকিব। ১৭তম ওভারে দ্বিতীয় বলে সাকিবকে তুলে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে লিটন দাসের তালুবন্দি হন ক্যারিবিয় অধিনায়ক।

তারপর বাংলাদেশের জয় ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু ই জয় প্রায় হাতছাড়া হতে বসেছিল পাওয়েলের দুর্র্ধষ ব্যাটিংয়ে। ৩৪ বলে তিনি করেন ৩৪ রান। কিন্তু তাকে মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত করেন মোস্তাফিজ। 

অপু ও মোস্তাফিজ নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। এ ছাড়া সাকিব ২টি ও রুবলে ১টি উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দলীয় ৭ রানের মাথায় উইকেট হারান ওপেনার লিটন দাস। ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু স্পিনার অ্যাশলে নার্সের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। আউট হয়ে যান ৪ রান করে।

৪ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন সৌম্য সরকার। ১৮ বল মোকাবিলা করে তিনি করেন মাত্র ১৪ রান। কিমো পলের বলে রোভম্যান পাওয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফিরে যান।

৪৮ রানে দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে যখন বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশ, তখন টাইগারদের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল টানতে থাকেন। শুধু তাই নয়, দলকে নিয়ে ক্যারিবীয়দের সামনে দারুণ এক চ্যালেঞ্জিং পর্যায়ে।

তারই ধারাবাহিকতায় ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম ইকবাল। ৩৫ বলে পূরণ করা তার এই হাফ সেঞ্চুরির ওপর ভর করে বাংলাদেশও এগিয়ে যেতে থাকে। তবে, ইনিংসের ১৬তম ওভারে আন্দ্রে রাসেলের ওপর চড়াও হন তামিম ইকবাল। রাসেলকে ৩টি ছক্কা এবং ১টি বাউন্ডারি মারেন তিনি। একাই নেন ২২ রান। ওভারের শেষ বলে ৪র্থ ছক্কা মারতে গিয়ে একেবারে বাউন্ডারি লাইনে কিমো পলের হাতে ধরা পড়েন তামিম।

আউট হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৭৪ রানের জ্বলজ্বলে এক ইনিংস উপহার দিয়ে যান তিনি। ইনিংসে ছিল ৪টি ছক্কা এবং ৬টি বাউন্ডারি।

তামিম আউট হয়ে যাওয়ার পর দলের ইনিংসকে টেনে নেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন সাকিব আল হাসান। ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতে পরিবর্তিত ফিল্ডার চাডউইক ওয়ালটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কিমো পলের বলে। আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৯ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় তিনি করেন ৬০ রান। ১৩ রানে মাহমুদউল্লাহ এবং আরিফুল হক অপরাজিত থাকেন ১ রানে। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান করে বাংলাদেশ।

ক্যারিবীয় বোলার অ্যাশলে নার্স এবং কিমো পল নেন ২টি করে উইকেট। ১ উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল।

সর্বাধিক পঠিত