কেন এবারের বিশ্বকাপ ছিল সবার সেরা
বিশ্বকাপ ২০১৮ শেষ হবার আগে থেকেই কথাটা মুখে মুখে ঘুরছিল - এটাই কি এ যাবৎকালের সেরা বিশ্বকাপ? প্রথম দিনের খেলা স্বাগতিক রাশিয়া সৌদি আরবকে ৫-০ গোলে হারিয়ে দিল, সেদিন থেকেই এ টুর্নামেন্টে নাটকীয়তা আর উত্তেজনার কোন অভাব ছিল না।
গ্রুপ পর্ব, নকআউট পর্ব এমনকি ফাইনালেও তেমন খেলাই দেখা গেছে - যেমন খেলা ফুটবলভক্তরা দেখতে চান। আজকাল লোকে প্রচুর ফুটবল খেলা দেখেন টিভিতে - বেশিরভাগই ক্লাব ফুটবল।
কিন্তু বিশ্বকাপ আসে প্রতি চার বছরে একবার। তাই তার ভেতরে এখনও একটা অন্যরকম আকর্ষণ এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য রয়ে গেছে যা কোথাও পাওয়া যায় না। দেখা যাক, এবারের বিশ্বকাপে কিভাবে এই নাটকীয়তা তৈরি হয়েছে
ফুটবল লিগের উত্তেজনা চলে সারা বছর ধরে ধিকিধিকি করে। বিশ্বকাপ অন্যরকম। এখানে উত্তেজনা তৈরি করে দপ করে জ্বলে ওঠার মতো। ২০১৮-তেও তাই হয়েছে।
টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনেই স্পেন আর পর্তুগালের ৩-৩ গোলে ড্র হওয়া খেলাটি, আর রোনাল্ডোর অসাধারণ ফ্রি-কিক - সেই খেলাটিকে ক্লাসিকের স্বীকৃতি এনে দেয়।
কিন্তু শুধু ওই খেলাটিই নয়, সেদিনের অন্য দুটি খেলাও নাটকীয়তায় কম যায় নি।
উরুগুয়ে ৮৯ মিনিটে গোল করে জিতে যায় মিশরের বিরুদ্ধে, ইরান হারায় মরক্কোকে ৯৫ মিনিটে গোল করে।
সবমিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপে নয়টি ম্যাচে জয়সূচক গোল হয়েছে খেলার শেষ মিনিটে বা ইনজুরি টাইমে।
এ ছাড়াও শেষ মিনিটে বা ইনজুরি টাইমের গোলে খেলা ড্র হয়ে গেছে এমন ম্যাচ ছিল চারটি।
এর আগের কোন বিশ্বকাপে এমনটা হয় নি।
ফেভারিট দলগুলো বিশ্বকাপে দর্শক টানে। তারা সবাই যদি আগেভাগেই হেরে গিয়ে বিদায় নেয়, তাহলে বোধ হয় টুর্নামেন্টের আকর্ষণ কমে যায়। এবার গ্রুপ পর্বে বিদায় নিয়েছে জার্মানি। আর নকআউট পর্বে বিদায় নিয়েছে স্পেন, ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। এর চেয়ে বেশি আপসেট না হওয়াই বোধ হয় ভালো।
বিশ্বকাপকে আকর্ষণীয় করতে চাই সুপারস্টার
স্পেনের বিরুদ্ধে রোনাল্ডোর হ্যাটট্রিক ছিল দারুণ, কিন্তু তিনি একাই পর্তুগাল দলকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করবেন, তেমনটা হয় নি।
মেসিও আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নিতে পারেন নি।
তাদের ক্লাবের পারফরমেন্স বিবেচনা করলে ভেবে অবাক হতে হয় যে তারা দুজনের কেউই বিশ্বকাপে নকআউট পর্বের ম্যাচে কোন গোল করতে পারেন নি।
আশা করা হয়েছিল, এবারের বিশ্বকাপে সুপারস্টার হবেন নেইমার।
কিন্তু তিনি এবং এডিন হ্যাজার্ড সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হয়েছেন - যথাক্রমে ২৬ এবং ২৭ বার।
নেইমারের ক্ষেত্রে বরং অনেকের চোখে দৃষ্টিকটু লেগেছে আঘাত পেয়ে পড়ে গিয়ে তার নাটক।
বরং এবারের বিশ্বকাপে তারকা হিসেবে বেরিয়ে এসেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে।
পেলের পর তিনি হলের প্রথম টিনএজার যিনি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে গোল করলেন।