আর্জেন্টিনাকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টারে ফ্রান্স
নকআউট পর্বের ম্যাচে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলের বড় ব্যাবধানে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। তাতে ফ্রান্সের হয়ে জোড়া গোল করেন এমবাপ্পে। বাকি দুটো গোল গ্রিজমান ও পাবার্দ।
টিক যেন নাটকিয়তা চলেছে ফ্রান্স আর্জেন্টিনা ম্যাচে। কখনো আর্জেন্টিনা ,কখনো ফ্রান্স। এবার এমবাপের গোলে ৩-২ গোলে এগিয়ে গেলো ফ্রান্স। ৬৪ মিনিটের মাথায় গোল করে এগিয়ে দেন ফ্রান্স।
শেষ পাঁচটি বিশ্বকাপের মধ্যে চারবারই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে আর্জেন্টিনা। ২০০২ সালে শুধু মাত্র তারা গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছিল। এবার বাড়ি যেতে হল দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে।
আর্জেন্টিনা আক্রমণাত্মক ফর্মেশন ৪-৩-৩ এ খেলে। মেসির খেলার কথা তাতে সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবে। কিন্তু তিনি ফলস নাইন হিসেবে ডানদিক থেকে শুরু করেন। এই কৌশল মোটেও কাজে দেয়নি। তাতে বরং বক্সের মুখের বলগুলোতে আর্জেন্টিনার সমস্যা হয়েছে।
৯ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনার বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক পায় ফ্রান্স। গ্রিজম্যানের নেয়া ফ্রি-কিক বারে লেগে ফিরে আসে। তারা এগিয়ে যায় ১৩তম মিনিটে।
মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে আর্জেন্টিনার বক্সের দিকে দৌড় মারেন এমবাপে। চারজনকে বিট করে সামনে চলে যান। বক্সে যখন ঢুকে পড়েন, সঙ্গে ছিলেন রোহো। তিনি এমবাপেকে ফেলে দিলে পেনাল্টি দেন রেফারি। গোল করেন গ্রিজম্যান।
১৯তম মিনিটে প্রথম গোল হজমের মতো ভুল করে আর্জেন্টিনা। পল পগবা নিচ থেকে লংবল দেন এমবাপেকে। সেই আগের মতো দুরন্ত গতিতে বক্সমুখে ছুটে আসেন। এবার ফাউল করেন তাগলিয়াফিকো। একটুর জন্য পেনাল্টি পায়নি ফ্রান্স। বক্সের একটু বাইরে থেকে নেয়া ফ্রি-কিক বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।
২৮তম মিনিটে আর্জেন্টিনা একটি সুযোগ সৃষ্টি করে। ডানদিক থেকে বল নিয়ে আসেন পাভন। তখন বক্সে ঢুকে পড়েন মের্কাদো। তিনি আলতো করে পুশ করলে উমিতিতির হাতে লাগে। মের্কাদো পেনাল্টির আবেদন করেন। কিন্তু রেফারি সাড়া দেননি।
আর্জেন্টিনা সমতায় ফিরে আসে ৪১তম মিনিটে। বানেগার কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সে না ঢুকেই নিচু ডিফেন্সের মুখে দূরপাল্লার শট নেন ডি মারিয়া। দেখার মতো জোরালো এই শটটি চকিতে জালে জড়িয়ে যায়।
১-১ সমতা থেকে ফিরে এসে দ্বিতীয়ার্ধের ৪৮তম মিনিটে মেসির পাস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মের্কাদো। বক্সের ডান দিক থেকে গোলে শট নিয়েছিলেন মেসি। সামনে ছিলেন মের্কাদো। পা সরিয়ে আনতে গিয়ে বলে লাগিয়ে ফেলেন। তাতেই শাপেবর। বল জড়িয়ে যায় জালে।
ফ্রান্স সমতায় ফিরে আসে ৫৭তম মিনিটে। লুকাস হার্নান্দেজের কাছ থেকে বল পেয়ে বেঞ্জামিন প্যাভার্ড দূর থেকে সাইডভলি করেন। বল বাঁক খেতে খেতে জালে জড়িয়ে যায়।
৬৪তম মিনিটে ফ্রান্স আবার এগিয়ে যায়। খুব কাছ থেকে নেয়া এমবাপের শট গোলরক্ষক আরমানির হাতের নিচ দিয়ে জালে জড়ায়। ওই এমবাপে চার মিনিট বাদে দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান ৪-২ করেন।
ডিফেন্স তখন যাচ্ছেতাই। এলোমেলো রক্ষণের সামনে এমবাপে প্রমাণ করেন তিনি বিশ্বসেরাদের একজন।
অলিভিয়ার জিরৌদের কাছ থেকে বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় শট নেন। অবাক করার বিষয় হল আর্জেন্টিনার একজন ডিফেন্ডারকেও তার পাশে দেখা যায়নি।
আর্জেন্টিনার আফসোস বাড়ে অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে। মেসির ক্রস থেকে হেড করে গোল করেন আগুয়েরো। ব্যবধান ৪-৩ হলেও ম্যাচে ফেরার মতো যথেষ্ট সময় ছিল না।