দুর্দান্ত জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনা
আগের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩ গোলে হেরে আর্জেন্টিনার নকআউট পর্বে খেলার সম্ভাবনা একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। এবারের বিশ্বকাপে অনেকেই তাদের শেষটাও দেখে ফেলেছিল। কিছুটা সম্ভাবনা বাকি ছিল, নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জিতলেই কেবল পরের পর্বে উঠবে তারা। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে জিতেছে।
তাই ‘ডি’ গ্রুপ রানার্সআপ হয়েই শেষ ষোলোতে ওঠে আর্জেন্টিনা। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়ে পরের পর্বে খেলা নিশ্চিত করে তারা। এই গ্রুপ থেকে ৩ ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের পর্বে ওঠে ক্রোয়েশিয়া।
আগের ম্যাচের দল থেকে ৪ জনকে ছাঁটাই করে নতুন করে দল সাজান কোচ হোর্হে সাম্পাওলি। ফরমেশনও পরিবর্তন করে ৪-৪-২ এ খেলিয়ে ফলও পান হাতেনাতে। ম্যাচে গোলের প্রথম সুযোগটি অবশ্য পেয়েছিল নাইজেরিয়া। ৯ মিনিটে আগের ম্যাচের জোড়া গোলদাতা আহমেদ মুসা দূর থেকে শট নিলেও তা গোলবারের এক ফুট উঁচু দিয়ে চলে যায়। এরপরই আর্জেন্টাইনদের জন্যে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটি আসে।
ম্যাচের ১৪ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বানেগার অসাধারণ ক্রস থেকে বুক দিয়ে বল ঠেকিয়ে ডান পায়ের জোড়ালো শটে গোলরক্ষকের ডান দিক দিয়ে ডান কর্নারে আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করার গোলটি করেন লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। বিশ্বকাপে ৬৬২ মিনিটের গোলখরা কাটালেন মেসি।
২৭ মিনিটে আরও একবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। মেসির বাড়ানো পাস থেকে হিগুয়েইন তার স্বভাবসুলভ ভুল করে গোলরক্ষকের গায়ে মারেন। ৩৪ মিনিটে আবারো সেই মেসিঝলক। এবার ফ্রি-কিক থেকে নেওয়া তার দুর্দান্ত শটটি গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারলেও গোলবার বাধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রথমার্ধে আর কোনো গোলের সুযোগ না পেলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে নাইজেরিয়া। সুযোগও পেয়ে যায় তারা। ৫১ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর নাইজেরিয়ান ফুটবলারকে ফেলে দেন মাচেরানো। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। ঠাণ্ডা মাথায় স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান ভিক্টর মোসেস। তার গোলে সমতায় ফিরে যেন প্রাণ ফিরে পায় নাইজেরিয়া। অন্যদিকে, পরের রাউন্ডে যেতে হলে আর্জেন্টিনার চাই জয়।
এমন চিন্তিত মন নিয়ে খেলতে গিয়ে বারবারই ভুল পাস দিচ্ছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা। ম্যাচের ৮১ মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন হিগুয়েইন। কিন্তু গোলমুখের সামনে বল পেয়েও গোলবারের ওপর দিয়ে মারেন। তার পরই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
৮৬ মিনিটে মার্কাদোর ডান পাশ থেকে বাড়ানো ক্রসে বা-পাশ থেকে উড়ে এসে ডান পায়ের দুর্দান্ত শটে গোল করেন মার্কস রোহো। তার ওই গোলে আনন্দে মেতে ওঠে পুরো গ্যালারিসহ সারা বিশ্বের আর্জেন্টাইন ভক্তরা। ম্যাচের শেষদিকে সময় ক্ষেপণের জন্য মেসি হলুদকার্ড পেলেও তা আর্জেন্টিনার জয়ে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টাইনরা। অন্যদিকে ৩ পয়েন্ট নিয়েও বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হলো নাইজেরিয়াকে।