রোমাঞ্চকর জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল
পুরো ৯০ মিনিট কোস্টারিকার বিপক্ষে গোল করতে ব্যর্থ ব্রাজিল। কোনো ভাবেই কোনো কিছু হচ্ছিল না। অবশেষে ইনজুরি টাইমে ভাঙে কোস্টারিকা বাধা।
ফিলিপে কৌতিনহো ৯১ মিনিটে গোল করলেন। শেষ বাঁশি বাজার আগে এবারের বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোলটা পেয়ে গেলেন নেইমারও। তাতে সব শঙ্কা আর কোস্টারিকা প্রতিরোধ ভেঙে জয় তিতের দলের। সেন্ট পিটার্সবার্গে ব্রাজিল পায় ২-০ গোলের জয়।
ব্রাজিলের একের পর এক আক্রমণ, বিপরীতে কোস্টারিকার প্রতিরোধের দেয়াল, সঙ্গে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সিদ্ধান্তে ব্রাজিলের পেনাল্টি বাতিল- সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে সবকিছুরই দেখা মিললো। যেখানে রক্ষণাত্মক কোস্টারিকার হৃদয় ভেঙে ব্রাজিল উৎসবে মাতে ইনজুরি টাইমের গোলে।
নির্ধারিত সময় শেষে তখন শুরু হয়েছে ইনজুরি টাইমের খেলা। মার্সেলোর ক্রস রবেতো ফিরমিনোর হেড হয়ে আসে গাব্রিয়েল জেসুসের কাছে। ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকারের বলটা ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। সেটা অবশ্য ব্রাজিলের জন্য আশীর্বাদ হয়েই আসে। তার বাজে নিয়ন্ত্রণের কারণেই দ্রুতগতিতে এগিয়ে এসে বলটি পায়ের উপরের দিকের অংশের শটে জালে জড়িয়ে দেন কৌতিনিয়ো।
প্রথমার্ধ থেকেই দাপট দেখিয়ে খেলেছে টুর্নামেন্টের হট ফেবারিট ব্রাজিল। কেবল গোলটাই পাচ্ছিল না। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে কৌতিনহোর দূরপাল্লার শট বক্সের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়।
১৩ মিনিটে বড় একটি সুযোগ পেয়েছিল কোস্টারিকাও। কিন্তু ইয়োহান ভেনেগাসের শট গোলপোস্টের বাম পাশ ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
২৫ মিনিটে নেইমারের পাস থেকে পাওয়া বল জালে জড়াতে ভুল করে নি ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার গ্যাবিয়েল জেসুস। তবে সেটা অফসাইডর কারণে বাতিল করে দেন রেফারি।
২৮ মিনিটে বল নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলেন নেইমার। কোস্টারিকা গোলরক্ষক কেইলর নাভাস এগিয়ে এসে কোনোমতে সেটা ফিরিয়ে দেন।
৩২ মিনিটে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে যান নেইমার, পাস দিয়েছিলেন জেসুসকে। তিনি সেটায় মাথা ছুঁয়াতে পারেননি, প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার ব্রায়ান অভিয়েদো বল ক্লিয়ার করেন। অফসাইডও ডাকেন রেফারি।
৪০ মিনিটে একাই বল নিয়ে বক্সের বাইরে বাঁ দিক থেকে শট নিয়েছিলেন মার্সেলো, নাভাসের সেটা ধরতে কষ্ট হয়নি। ৪৩ মিনিটে ব্রাজিলের আরেকটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ রুখে দেয় কোস্টারিকা। ফলে গোলশুন্য সমতা নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে ৪৮ মিনিটে নিশ্চিত একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করে ব্রাজিল। পাওলিনহোর ক্রসে আরেকটি সংঘবদ্ধ আক্রমণে গোলমুখে জটলা পাকিয়েও সাফল্য পায়নি সেলেসাওরা। ৪৯ মিনিটে একইরকম আক্রমণে আরও একবার হতাশ হতে হয় তাদের। ফ্যাগনারের ক্রস থেকে বল পেয়ে হেসুসের শট গোলবারে লেগে ফেরত আসে।
৫৬ মিনিটে পাওলিনহোর ক্রস থেকে বক্সের মধ্যে নেইমারের শট আঙুলের ডগা দিয়ে ফিরিয়ে দেন নাভাস। পরের মিনিটে পাওলিনহোর কাছ থেকেই বল পেয়েই সরাসরি রিয়াল গোলরক্ষকের হাতে মেরে দেন কৌতিনহো।
৭০ মিনিটে নেইমারের কর্ণার থেকে কাসিমিরো দারুণ একটি হেড নিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা দক্ষতার সঙ্গে ধরে ফেলেন নাভাস। মিনিট দুয়েক পর কোস্টারিকা ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে গিয়েছিলেন নেইমার। তবে পিএসজি তারকা বলটা আরও একটু ভেতরে না নিয়ে বক্সের বাইরে থেকেই শট মেরে দেন, যদিও সেটা একটুর জন্য জাল পায়নি।
৭৭ মিনিটে বলতে গেলে একাই মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে কোস্টারিকার বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। কিন্তু ফাঁকা পেয়েও শটটা নিতে পারেননি। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের আলতো ছোঁয়ায় বক্সের মধ্যেই পড়ে যান নেইমার। ভিএআরে দেখা যায় এটা ফাউল হয়নি।
গোল পেতে এরপর আক্রমণ চালিয়েই গেছে ব্রাজিল। ৮৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে কৌতিনহোর শট ধরে ফেলেন নাভাস। একই মিনিটে কাসিমিরো, হেসুস আর নেইমারের সমন্বিত আরেকটি আক্রমণ ডিফেন্সে আটকে গেলে গড়িয়ে যাওয়া বল শুয়ে ধরে ফেলেন কোস্টারিকা গোলরক্ষক।