• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

আস্থা রাখুন মুশফিকে, ফিরিয়ে আনুন আশরাফুলকে

প্রকাশ:  ০৮ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:২৭ | আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:০৫
উৎপল দাস
প্রিন্ট

একজন ক্রিকেটার যখন দলের প্রয়োজনে মাথায় আঘাত পাওয়ার পরও ব্যাটিং চালিয়ে যাবার সাহস দেখান তখন খেলার প্রতি তার কমিটমেন্ট ও দেশপ্রেম নিয়ে কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ থাকে না। এর আগেও আড়াই দিনে টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। শতাধিক টেস্টের অর্ধেকেরও মতো টেস্ট কিন্তু আমরা ইনিংস ব্যবধানেই হেরেছি। তাই বলে আজকের বাংলাদেশ আর ১০ বছর আগের বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এক পাল্লায় মাপা ঠিক হবে না। 

যারা বলেছিল, বাংলাদেশের বিপক্ষে একদিনেই টেস্ট জেতা সম্ভব তাদের মুখে চুলকালি মাখিয়ে টেস্টে হারিয়েছে বাংলার টাইগার বাহিনী। সে বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। বগুড়া থেকে উঠে আসা বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ক্রিকেট সক্ষমতা বা অধিনায়ক হিসাবে কতটা সফল তা নিয়েও বিতর্কের সুযোগ কম। 

কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ইনিংস ও ২৫৪ রানের বড় ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমর্থক হিসাবে আমিও বেজায় কষ্ট পেয়েছি। প্রথম টেস্টে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েই ব্যাকফুটে চলে যায় টাইগার বাহিনী। একই ভুলের পুনারাবৃত্তি দেখেছি দ্বিতীয় টেস্টেও। কিন্তু অধিনায়ক যখন মাঠে টস জেতার পর ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটাতে না পারেন, তখন বিষয়টা আমাদের যথেষ্ট পীড়া দেয়, কষ্টও বাড়ায়। 

একটা কথা ক্রিকেটে সব সময়ই বলা হয়ে থাকে, ক্রিকেট ইজ এ মাইন্ড গেইম। এখানে ক্রিকেটারদের মানসিক স্বাধীনতা না দিলে তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক। কোচ এবং বোর্ড কর্তাদের এক্ষেত্রে আরো বেশি সংবেদনশীল হওয়া জরুরি বলে মনে করি। 

দুই ইনিংস মিলিয়ে লিটন দাস যা একটু ব্যাটিং করতে পেরেছেন। মুশফিকও দ্বিতীয় ইসিংসে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু একাদশ গঠনে সাব্বির, সৌম্য সরকারকে মূল একাদশে নেয়ার যুক্তি হয়তো অনেকেই দেখাবেন যে তামিম অসুস্থ আর সাব্বিরের জায়গায় অন্য কাউকে খেলানোর প্লেয়ার ছিল না। মেনে নিলাম, যুক্তিটা। কিন্তু নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনকে কেন স্কোয়াডেই রাখা হলো না?

এর চেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, দুই টেস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হারায় অধিকায়ক মুশফিককে নিয়ে যত জল্পনা-কল্পনা। অনেকে বলছেন, মুশফিক অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন। এমনকি তার বিকল্প খোঁজার কাজও শুরু করেছে বিসিবি। তাদের উদ্দেশ্যে শুধু এতটুকুই বলতে চাই, টেস্ট অধিনায়ক হিসাবে মুশফিকের বিকল্প এই মুর্হুতে নেই। তার ওপর আস্থা রাখুন। 

৩ নম্বর পজিশনে ব্যাংটিং নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার মোহাম্মদ আশরাফুলকে বিবেচনা করা যেতে পারে। জাতীয় ‍লীগে সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিনি কয়েকটি অর্ধশতকও হাঁকিয়েছেন। শেষ একটা সুযোগ তাকে দেয়াই যেতে পারে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিসিবিতে আবারো ক্রিকেটার হিসাবেই ফিরেছেন তিনি। ভারতীয় নিষিদ্ধ লীগ আইসিএলে যখন হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এক অন্ধকার সময়ে ঠেলে দিয়ে আফতাব-অলকরা টাকার কাছে বিক্রি হয়েছিল, তখন পরম মমতায় আশরাফুলই কিন্তু টাইগার ক্রিকেটের হাল ধরেছিলেন। সেই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই আশরাফুলকে একটা শেষ সুযোগ দিন। শেষ কথা এটাই, আস্থা রাখুন মুশফিকে, ফিরিয়ে আনুন আশরাফুলকে।

লেখক : সাংবাদিক ও ক্রিকেট বিশ্লেষক

সর্বাধিক পঠিত