কাতালুনিয়া স্বাধীন হলে কী করবে বার্সা
বার্সেলোনার লা লীগা ছাড়ার সম্ভাবনা নিয়ে আগেও বহুবার চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে। সেসব ছিল অনুমাননির্ভর আলোচনা। এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। স্পেন থেকে স্বাধীনতার প্রশ্নে কাতালুনিয়া রাজ্যে গণভোটের পর উত্তাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে বার্সেলোনাকে।
কাতালুনিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলে সত্যি সত্যিই স্প্যানিশ লীগ থেকে বেরিয়ে যেতে পারে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাবটি। এমন সম্ভাবনার কথা জানালেন ক্লাব সভাপতি হোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ।
স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন ও লা লীগা কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়ে দিয়েছে, কাতালুনিয়া স্বাধীন হয়ে গেলে লা লীগায় খেলতে দেয়া হবে না কোনো কাতালান ক্লাবকে। রোববারের গণভোটের পর মাতৃভূমির স্বাধীনতার কথা মাথায় রেখে ক্লাবের পরবর্তী করণীয় নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে বার্সেলোনার পরিচালনা পর্ষদ। বিকল্প ভাবনায় লা লীগা ছেড়ে ইউরোপের অন্য কোনো দেশের লীগে খেলার পরিকল্পনাও রয়েছে।
স্বাধীনতার প্রশ্নে কাতালানদের গণভোটে বাধা দেয়ার পাশাপাশি এই গণভোটের আয়োজন ও ফলকে অবৈধ ঘোষণা করেছে স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কাতালান কর্তৃপক্ষের দাবি, স্বাধীনতার পক্ষে ৯০ শতাংশ ভোট পড়েছে। গণভোটের দিন রাজ্যজুড়ে সহিংস পরিস্থিতিতে লাস পালমাসের বিপক্ষে লা লীগার ম্যাচটি খেলতে রাজি ছিল না বার্সেলোনা। কিন্তু লীগ কর্তৃপক্ষ তাদের খেলতে বাধ্য করেছে। প্রতিবাদ হিসেবে দর্শকশূন্য মাঠে রুদ্ধদ্বার ম্যাচ খেলেছে বার্সা। কিন্তু শাস্তির ভয়ে ম্যাচ খেলতে রাজি হওয়ায় ক্লাবের অনেক সমর্থক ও পরিচালক ক্ষুব্ধ। সোমবার পদত্যাগ করেছেন ক্লাবের দু’জন বোর্ড সদস্য। এমন অস্থির পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় ঠিক করতে সোমবার পরিচালনা পর্ষদের সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন বার্তোমেউ। সভা শেষে তিনি জানালেন, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন ক্লাবের বোর্ড পরিচালকরা।
স্বাধীনতা পেলে ক্লাবকেই ঠিক করতে হবে আমরা কোন লীগে খেলব। সবাই মিলে আলোচনা করলে অবশ্যই এর একটা সমাধান বের করা সম্ভব। যদি এটা (স্বাধীনতা) ঘটে যায়, বোর্ড পরিচালকরা সেটা দেখবেন এবং ঠাণ্ডা মাথায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
এর আগে কাতালান ক্রীড়ামন্ত্রী জেরার্ডো ফিগেরাস বলেছিলেন, স্পেন থেকে কাতালুনিয়া আলাদা হয়ে গেলে বার্সেলোনা অন্য কোনো দেশের লীগে খেলতে পারবে।
সেটা প্রতিবেশী দেশ ফ্রান্স, ইতালি কিংবা ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগও হতে পারে। যেভাবে ইংল্যান্ডের ক্লাব না হয়েও ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলে সোয়ানসি। একইভাবে ফরাসি লীগে খেলছে মোনাকো। বার্সেলোনা ভবিষ্যতে সেই পথে হাঁটলে নিশ্চিতভাবেই রং হারাবে লা লীগা। এল ক্লাসিকোই যে লা লীগার প্রাণ।
সুত্র: ওয়েবসাইট