• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

গঠনতন্ত্র পরিবর্তন না হলে আইসিসি থেকে বহিষ্কার হতো বাংলাদেশ

প্রকাশ:  ০২ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৩৬
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রিন্ট

নানা জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বহুল আলোচিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। তবে এজিএম ছাপিয়ে আলোচনায় ছিল বিসিবির 'গঠনতন্ত্র' । যে আলোচনার পালে হাওয়া দিয়েছেন সাবেক বিসিবি পরিচালক মোবাশ্বর হোসেন চৌধুরী। আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করে। তবে আলোচিত এই গঠনতন্ত্রটির যে সংশোধনী নিয়ে বিতর্ক, সেই সংশোধনী ২০১৩ সালে পাশ না হলে বাংলাদেশকে আইসিসি থেকে বহিষ্কার করা হতো বলে জানিয়েছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন।

এজিএমের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আইসিসির দেয়া দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী সংশোধনীগুলো যদি ওই সময় বিসিবির গঠনতন্ত্রে সংযুক্ত না করা হতো তাহলে আইসিসি থেকে বাংলাদেশ বহিস্কার হতে হতো বাংলাদেশ এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি প্রধান।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের (আইসিসি) যে সকল ধারাগুলো ছিল, যা আমদের গঠনতন্ত্রে আনতে হবে। সেগুলো গঠনতন্ত্রে না ছাড়া তখন কোন পথ আমাদের সামনে খোলা ছিল না। কারণ ওখানে পরিস্কারভাবে লেখা আছে যে, যদি কোন দেশ গঠনতন্ত্র সংশোধন না করে, তাদের মেম্বারশীপ পর্যন্ত বাদ দিয়ে দেয়া হবে। তাদের সাসপেন্ড করা হবে। আইসিসির সাথে তারা কোনভাবেই সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। এ বিষয়ে একাধিকবার তারা আমদের কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছে।’

গঠনতন্ত্রের সংশোধনীর বিষয়ে আইসিসি থেকে যখন নির্দেশনা পাঠানো হয় তখন এ ব্যাপারে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশসহ তিন দেশ। বাকি দুই দেশ দ্রুত সংশোধনীও করে ফেলে বলে জানান পাপন। তিনি বলেন, ওই সময়টায় বাংলাদেশ,পাকিস্তান আর শ্রীলংকা আমরা তিন দেশ পিছিয়ে ছিলাম, কিন্তু এরই মধ্যে আমরা বাদে বাকি দুটো দেশ তাদের গঠনতন্ত্র বদলে, নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে ফেলে। শুধু বাকি ছিল শুধু বাংলাদেশ।

গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের জন্য অনেকদিন ধরে আইসিসি বললেও ২০১৩ সালে ফাইনাল ডেডলাইন দিয়ে দেয়া হয় বলেও জানান বিসিবি বিগ বস। তিনি বলেন, ২০১১-এর শেষে একটি চিঠি দেয়া হল, ২০১৩ এর প্রথম ভাগের মধ্যেই এই গঠনতন্ত্রের সংশোধনীর বিষয়গুলো প্রত্যেকটা দেশকে মানতে হবে। এর মধ্যে অনেক ব্যাপার ছিল। যার মধ্যে উদাহরণস্বরুপ, একটা ছিল নির্বাচিত কমিটি। আগে আপনারা জানেন যে, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে, ক্রিকেট বোর্ডেরও পুরো পরিচালনা পরিষদও বদলে যেত। এই জিনিসটা কোনভাবেই আইসিসি গহণ করবে না। এটা নিয়ে অনেকদিন ধরেই কথা-বার্তা চলছিল। পরে ফাইনাল ডেডলাইন দিয়ে দিল তারা।

এমন দোটানায় পড়ে বিসিবি দ্রুত আইসিসির গাইডলাইন নিয়ে গঠনতন্ত্রে সংশোধনী আনা হয় বলে জানেন নাজমুল হাসান পাপন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কি করলাম, আমাদের কাছে আর কোন পথ ছিল না। আমরা যদি এখন একটা নির্বাচন দেইও, আর আইসিসি যদি এই বোর্ডকে না মানে তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেট যাবে কোথায়? তখন আমরা কি করলাম, আমরা আইসিসির কাছ থেকে গাইডলাইন্সগুলো নিয়ে সেগুলোকে সংযুক্ত করলাম গঠনতন্ত্রে।

নাজমুল হাসান পাপন দাবী করেন ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিসিবির গঠনতন্ত্রে যে সকল পরিবর্তন এসেছে তার সবগুলোই অনুমোদন করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। ফলে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই এনএসসি থেকে গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০০ সালে ওনারা একটা এজিএম করেন । ওখানে যে গঠনতন্ত্রটা আছে, এটার যে পরিবর্তনগুলো এনএসসি করে দেয়। যেটা প্রথমবার। সরকার পরিবর্তন হল, তখন তারা এসে আবার একটা বড় পরিবর্তন আনলো গঠনতন্ত্রে। আর সেই গঠনতন্ত্রেও সমস্ত পরিবর্তন এনএসসিই করে দিলো। ইনফ্যাক্ট প্রথমবার থেকে আমরা আসার আগ পর্যন্ত গঠনতন্ত্রে যতগুলো পরিবর্তন এসেছে, বলেছে হয়তো ক্রিকেট বোর্ড, চেঞ্জটা হয়েছে হয়তো তাদের ইচ্ছায়, কিন্তু করেছে এনএসসি। ফলে সবার সাথে আলাপ-আলোচনা করে আমরা যেটা বুঝলাম যে, এটাকে এনএসসিতেই পাঠাতে হবে। সব সময় যা হয়ে এসেছে আমরা পাঠিয়ে দেই এনএসসিতে। এরপর এননএসসি এই পরিবর্তনগুলোকে সংযুক্ত করে একটা অনুমোদন আমাদেরকে দেয়। 

এডহক কমিটি গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনবে এটি পাপন মানতে পারেননি। তিনি মনে করেন, এডহক কমিটি নাকি গঠনতন্ত্রে কোন হাতই দিতে পারে না। শুনতেও তো কেমন লাগে। একটা এডহক কমিটি আসবে নির্বাচন দেয়ার জন্য, তারা গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনবে তা তো হতে পারে না।

এর আগে সকাল ১১টা ২০ মিনিটে শুরু হয় এজিএম। প্রথমেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এরপর ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যু বরণ করা কাউন্সিলরদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিসিবির সফলতা এবং আয়-ব্যায়ের হিসেব তুলে ধরেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।

সর্বাধিক পঠিত