• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

স্যার মাইয়াডারে আমনের কাছে দিয়া গেলাম----

প্রকাশ:  ২৮ জুন ২০১৮, ২৩:১৭ | আপডেট : ২৮ জুন ২০১৮, ২৩:৪৭
অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার
প্রিন্ট

নিরঞ্জন দাস । রিক্সা চালায়, থাকে চাঁদপুর শহরে পুরানবাজার। উপার্জনক্ষম বাবার আয়ে তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে অনার্স পড়ে, মেঝ মেয়ে আগামীবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিবে। ছোট মেয়ে প্রিয়াঙ্কা দাসকে আজ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করাতে কলেজে এসেছে। শির্ণকায় দেহ নিয়ে রিক্সা চালিয়ে যা উপর্জন করে তা দিয়ে সংসার এবং তিন মেয়ের পড়ালেখা। রিক্সা চালিয়ে সংসারের ঘানি টেনে মেয়েদের পড়ালেখার প্রতি পিতার এমন অদম্য চেষ্টা আমাকে অনেকটাই আশ্চর্য করেছে।
প্রিয়াঙ্কাকার সাথে আলাপ করে জানলাম, দরিদ্র পিতার ইচ্ছে সন্তানদের মানুষ করে তুলবে। তার যা কিছু স্বপ্ন এই মেয়েদের নিয়েই। মেয়েটিও পড়ালেখায় ভাল। এস এস সিতে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.৪৪ পেয়েছে। নিরঞ্জন জানালো স্যার মাইডার প্রতি কোন যত্ন নিতে পারি নাই , কোন মাস্টার রাখতে পারি নাই , ঠিকমত খাইতে দিতে পারি নাই , বই খাতা দিতে পারি নাই । এরপরও মাইয়াডা পাস করছে , স্যার আপনিই এখন ভরষা। আপনি যদি মাইয়াডারে একটু দেহেন । আমি আর পারতেছিনা।

ইচ্ছে করে তাকে একটু যাচাই করার জন্য বল্লাম ভর্তি করাবেন যে টাকা পয়সা কিছু এনেছেন ? জানালো স্যার আজ রিক্সা চালাইতে যাইতে পারি নাই। টাকা পামু কই ? এই বলেই কেঁদে দিল। তাকে শান্তনা দিয়ে বল্লাম ঠিক আছে মেয়ের দায়িত্ব আমি নিলাম। আপনাকে এই কান্নাকাটি বন্ধ করতে হবে। একজন বাবা হয়ে আপনার সন্তানদের পড়ালেখার জন্য যা করেছেন অনেক বিত্তশালীও সন্তানদের প্রতি এমন নজর রাখে না। আপনি একজন গর্বিত বাবা। আপনার আর্থিক সচ্ছলতা না থাকতে পারে কিন্তু আপনার যা আছে তা অনেকেরই নেই। আপনার মত যদি সব মা বাবা হতো তবে সমাজটা অনেক পাল্টে যেতো। মেয়েটির ভর্তির ব্যবস্থা করে তাকে বাড়ী পাঠিয়ে দিলাম। বল্লাম আগামী সপ্তাহে এসে বই খাতা নিয়ে যাবেন। মনে মনে ভাবলাম দিন দিন আমার সংসার বড় হচ্ছে।

সূত্র : অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদারের ফেসবুক পেজ হতে

সর্বাধিক পঠিত