• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

কসোভো এবং আলবেনিয়ানদের কাছে এই গোলদুটি দুইটা বোমার মতন

প্রকাশ:  ২৪ জুন ২০১৮, ০৮:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

গত কালকে সুইজারল্যান্ড এবং সার্বিয়ার খেলাতে দুইটা গোল হয়েছে। দুইটা গোল করেছে সুইস ফরওয়ার্ড জাহাকা এবং শাকিরি। সাধারন ভাবে এই গোলদুটি আপনার চোখে খুবই সাধারন মনে হতে পারে কারন এটা স্বাভাবিক।

কসোভো এবং আলবেনিয়ানদের কাছে এই গোলদুটি দুইটা বোমার মতন। মজার বিষয় হচ্ছে সুইজারল্যান্ড এর নাগরিকরা এই গোলদুটি যতটা না উদযাপন করেছে তার চেয়ে বেশি উদযাপন করেছে আলবেনিয়ানরা। এই গোল দুটির সাথে জড়িয়ে আছে হাজার হাজার মানুষের রক্তের ইতিহাস।

যে দুজন গোল দিয়েছে এই দুইজন কিন্তু জন্মসুত্রে সুইজারল্যান্ড এর নাগরিক না। এর হচ্ছেন আলবেনিয়ান, আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে এদের বাড়ি কসোভো তে ছিলো। ১৯৯৫ সালে সার্বিয়ান আর্মির প্রচন্ড নির্যাতন এবং গনহত্যার মুখে এদের দুইজনের পরিবার সুইজারল্যান্ড পালিয়ে আসে। শাকিরির বাবা কসোভোর স্বাধীনতার জন্য জেল খেটেছেন দীর্ঘদিন এবং প্রচন্ড নির্যাতনের স্বিকার হয়েছেন। এর পরে তারা বহু চরাই উতরাই পেড়িয়ে এখন সুইজারল্যান্ড জাতিয় দলের জার্সি গায়ে বিশ্বকাপে খেলছে!

সার্ব বাহিনীর সেই গনহত্যাকে মনে করে দেয়ার জন্য ওরা দুইজনই গতকাল গোল করার পরে হাত দিয়ে এক ধরনের সংকেত তৈরি করে যেটা দিয়ে আসলে "আলবেনিয়ান ঈগল" বুঝানো হয়েছে। এবং তারা এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে সার্বিয়ান সমর্থকদের সামনে বার বার করতেই থাকে। যাতে বিষয়টা তাদের কলিজা পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে। আর মজার বিষয় হচ্ছে তারা এই কাজ রাশিয়াতে বসে করছে। এই জটিল সমীকরন বুঝতে হলে আপনাকে সেই ঘটনার পুরো বিষয়টা জানতে হবে।

শাকিরি আরো মারাত্মক কাজ করেছে,সে তার পায়ের গোড়ালিতে এক পাশে সুইজারল্যান্ড এর পতাকা রেখেছে এবং অন্যপাসে কসোভোর পতাকা রেখেছে এবং মজার বিষয় হচ্ছে সুইজারল্যান্ড সরকার বিষয়টা গ্রহন করেছে। এর একটা প্রধান কারন হচ্ছে সার্বিয়া এখনো কসোভোকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।

বিশ্বের বড় বড় সব মিডিয়া দেখলাম আজকে সকালে ফেটে পরেছে এই ঘটনায়। গার্ডিয়ান তাদের ফ্রন্টপেইজ এ এটা নিয়ে একটা বিস্তারিত রিপোর্ট করেছে। সার্ববাহিনির গনহত্যার সেই ঘটনা পুরো পৃথিবী ভুলেই গেছিলো। কিন্তু গত কালকে রাতে সেই গনহত্যা থেকে বেচে আসা মাত্র দুইজন মানুষ পুরো পৃথিবীর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এবং মনে করিয়ে দিয়েছে যে তখন কি ঘটেছে!

আর আমরা কি করি? পাকিস্তানের খেলা হলে শহীদ জুয়েল স্ট্যান্ডে "ম্যারি মি আফ্রিদি" দেখি হাজারে হাজারে। অনেক কিউট জাতি আমরা।

কার্টেসি - Anirudha Jahangir
সংগ্রহ: সরফুল তাজ