• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

গাড়ি ভাংচুর ও হামলার ঘটনায় ফরিদগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা খাজে আহমেদসহ ৩ জন কারাগারে

প্রকাশ:  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:৫৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ফরিদগঞ্জের সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার গাড়ি ভাংচুর, চালককে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে রক্তাক্ত জখম, নগদ ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মাদক সেবন করার দায়ে ২টি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ হারানো উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খাজে আহমেদ মজুমদার, মহিউদ্দিন রিমন ও আয়াত উল্যাহ মাসুদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাসান জামান। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি রাত ৯টা পর্যন্ত জেল গেটে রাখা হয় খাজে আহমেদ মজুমদারকে হাসপাতালে এনে চিকিৎসার প্রয়োজনে ভর্তির জন্যে। পরে সে চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি ওই মামলার ১৪ আসামী জামিনের জন্যে আসলে আদালত ১১ জনের জামিন মঞ্জুর করেন এবং উল্লেখিত ৩ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কোর্ট পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আদালতের আদেশের পরে ৩ আসামীর মধ্যে ১নং আসামী খাজে আহমেদ অসুস্থ দাবি করে তার আইনজীবী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর চিকিৎসার জন্যে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে বিকেলে চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার মোশারফ ইউসুফ আসামী খাজে আহমেদ মজুমদারকে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্যে নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে ২৯ জানুয়ারি সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিআরডিবি কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শুরু হয়। ওই সভায় অংশগ্রহণ করেন সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া। ঠিক ওই সময় এমপির গাড়ি নিয়ে বাইরে অবস্থান করেন গাড়ির চালক মোঃ কাদির বেপারী (২৭)। তখন সংঘবদ্ধ অস্ত্রধারী ৩০-৪০ জন গাড়ির সামনে এসে শামছুল হক ভূঁইয়াকে উদ্দেশ্যে করে বিভিন্ন কটুক্তি করে এবং দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গাড়িটি ভাংচুর করে। বাধা দিতে গেলে চালক কাদিরকে তারা মারধর করে রক্তাক্ত জখম এবং গুরুতর আহত করে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৯০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে এবং হামলায় বর্ধিত সভাস্থল উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি চত্বর ভাংচুরের শিকার হয়।
চিকিৎসা শেষে আহত চালক কাদির বাদী হয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি ফরিদগঞ্জ থানায় ১৬ জনের নাম নির্দিষ্ট করে এবং অজ্ঞাতনামা ক’জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা নং-২৫/২/২০১৯। জিআর মামলা নং-৬৭/১৯। মামলার ধারাগুলো হচ্ছে-৪৩/৪৮/৪৯/২৩/২৪/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬/৩৪ পিসি।
মামলার বিবরণ থেকে আরো জানা যায়, ১নং আসামী খাজে আহমেদ মজুমদার গাড়ির চালক আঃ কাদির বেপারীকে ঘটনার সময় কিরিচ দিয়ে মাথার ডান পাশে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করেন। এতে আঃ কাদির মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপরে খাজে আহমেদ তার বুকে লাথি মেরে এবং গলায় চাপ দিয়ে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে। ওই সময় ঘটনাস্থলে থাকা মামলার ১নং সাক্ষী ওই অবস্থা থেকে চালককে উদ্ধার করেন।
মামলাটি চলমান অবস্থায় তদন্তের দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চাঁদপুরের পুলিশ পরিদর্শক মীর মাহবুবুর রহমান। তিনি মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, ১নং আসামী খাজে আহমেদ মজুমদারের মাদকসেবন করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। মাদকের সাথে জড়িত প্রমাণ হওয়ার কারণে তাকে ইতঃমধ্যে উপজেলার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির পদ বাতিল করেন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কুমিল্লা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।