কাশ্মীর গণহত্যার সপক্ষে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আইনজীবী খাওয়ার কুরেশি। ছবি: রয়টার্স
কাশ্মীরে গণহত্যা প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য, বললেন পাকিস্তানের আইনজীবী
পাকিস্তানকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন দেশটির আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আইনজীবী খাওয়ার কুরেশি। তিনি বলেছেন, সাক্ষী-প্রমাণের অভাবে কাশ্মীরে গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণ করা তাঁর দেশের পক্ষে ‘অত্যন্ত কঠিন’ হবে।
সম্প্রতি ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিল করে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। একই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরকে দুই ভাগ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছিল, কাশ্মীর বিরোধ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে যাবে তারা। এ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার কুরেশি এমন মন্তব্য করলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনজীবী কুরেশি বলেছেন যে ১৯৪৮ সালে জেনেভায় গৃহীত গণহত্যা সনদের অধীনে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে যেতে পারে। ওই কনভেনশনে দক্ষিণ এশিয়ার উভয় দেশই সই করেছিল।
পাকিস্তানের সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল ৯২ নিউজে প্রচারিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে খাওয়ার কুরেশি বলেন, জাতিসংঘের প্রধান আদালত আইসিজে। গণহত্যা সনদ অনুযায়ী অতীতে গণহত্যা করেছে, এখন গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে বা গণহত্যা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে, এমন যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অভিযোগ করা যাবে। তিনি বলেন, তবে যথেষ্ট সাক্ষ্য–প্রমাণ না থাকায় পাকিস্তানের পক্ষে মামলাটি আইসিজেতে নিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন হয়ে যাবে।
কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আলোড়ন সৃষ্টির চেষ্টা করে পাকিস্তান। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারতীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে পাকিস্তান। তবে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ দেশ একে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় বিষয় বলে মত দিলে পাকিস্তানের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। ইস্যুটিকে আন্তর্জাতিককরণের লক্ষ্যে মরিয়া ইসলামাবাদ একেবারে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছে।
কাশ্মীরের বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহসহ বিশ্বের বিভিন্ন নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করে যোগাযোগ করলেও ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান।
ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে চলমান উত্তেজনার ইতি টানতে বলা হয়েছে পাকিস্তানকে। তবে ভারত পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের প্রতি সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সমর্থন বন্ধ করলেই কেবল পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবে তারা।