আ’লীগের শীর্ষ পদে নজর এমপিদের
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ পদ পেতে কয়েকজন সংসদ সদস্য সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। ঈদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতে না হতেই তারা কেন্দ্রে লবিং-গ্রুপিং শুরু করেছেন। ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর তিন বছর মেয়াদি জেলা কমিটি গঠন করা হয়।
ওমর ফারুক চৌধুরীকে সভাপতি ও আসাদুজ্জামান আসাদকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত কমিটির মেয়াদ দেড় বছর আগে শেষ হয়েছে। এদিকে ২০১২ সালে গঠিত সব উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির মেয়াদও শেষ হয়েছে। এসব কমিটির অধিকাংশই এখন অন্তর্কোন্দলে জর্জরিত। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, হাইব্রিড নেতাদের উপদ্রপে তারা যন্ত্রণায় আছেন। হাইব্রিডদের কাঁধে ভর করেই সংসদ সদস্যরা এখন জেলা কমিটির শীর্ষ পদ দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগে কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের কাজ শুরুর নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু সংসদ সদস্যরা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করছেন না। জেলার অর্ধেক উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্যরা দলের সভাপতির পদে থাকায় নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগও সাধারণ নেতাকর্মীরা নিতে পারছেন না। শুধু ইউনিয়ন কমিটি নয়, উপজেলা ও পৌর কমিটিগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সংগঠিত না করে সরাসরি জেলা কমিটির পদগুলো দখলে নিতে নেতাদের তৎপরতা বেশি বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
তারা বলছেন- ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌর কমিটিগুলো গঠন না করে কোনোভাবেই সরাসরি কোনো নেতাকে পদে বসিয়ে দেয়ার বিষয়টি এবার তারা মানবেন না। কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে জেলা কমিটির নেতা নির্বাচনের দাবি তাদের। নাম প্রকাশ না করে কয়েকটি উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এমন মতামত দেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ যুগান্তরকে বলেন, রাজনীতির মাঠে দলের অবস্থা বেশ খারাপ। হাইব্রিড নেতারা সংসদ সদস্যদের সঙ্গে লেগে থেকে সব সরকারি সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে তৃণমূলে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম হয়েছে।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ওমর ফারুক চৌধুরী সাড়ে চার বছরে নিজ সংসদীয় এলাকা গোদাগাড়ী ও তানোরের বাইরে দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নেননি। এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সভা ও অনুষ্ঠানেও তিনি অনুপস্থিত থেকেছেন। এবারও তিনি সভাপতি পদ ধরে রাখতে লবিং করছেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ পেতে চেষ্টা করছেন। তার ঘনিষ্ঠ বাঘা-চারঘাটের একাধিক নেতা জানান, জেলা কমিটির সভাপতি হয়ে দলকে নতুন করে সাজাতে চান শাহরিয়ার। জেলা কমিটির সভাপতির পদ পেতে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা কেন্দ্রে লবিং করছেন। এছাড়া রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হকও সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক যে কোনো একটি পদ পেতে কেন্দ্রে জোর লবিং করছেন। রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আয়েন উদ্দিনও লবিং করছেন।
নাম প্রকাশ না করে তানোর, মোহনপুর ও পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, নেতাকর্মীদের থেকে এমপিরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এজন্য কেন্দ্রে তারা লবিং করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আয়েন উদ্দিন এমপি যুগান্তরকে বলেন, নেতৃত্ব নির্বাচন দু’ভাবেই হয়ে থাকে। কোনো পদে কাউকে কেন্দ্র সরাসরি বসিয়ে দিলে সেটিও নেতাকর্মীদের মানতে হয়।যুগা্নতর